চুলের বৃদ্ধিতে মাথা ম্যাসাজের কোনো ভূমিকা রয়েছে?
মাথার ত্বকের ম্যাসাজে চুল লম্বা, ঘন ও অধিক ঝলমলে হয়—এমন একটি জনশ্রুতি অনেক দিন থেকে প্রচলিত রয়েছে। মাথার ম্যাসাজ একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি। যুক্তি হচ্ছে, মাথা ম্যাসাজ করলে চুলের গোড়ায় রক্ত, অক্সিজেন ও পুষ্টির সরবরাহ বেড়ে যায়। এ ধরনের ডাক্তারি খুব ভালো লাগারই কথা। তবে অধিকাংশের বেলাতে এসবের কোনো দরকারই পড়ে না। প্রকৃতপক্ষে মাথার ত্বক হচ্ছে শরীরে অধিক রক্ত চলাচলসমৃদ্ধ অন্যতম একটি অঞ্চল। চুলের জেল্লা বাড়ানোর জন্য মাথার ত্বকে সরবরাহ বাড়ানোর স্বার্থে কোনো রকম উদ্দীপকই এ ক্ষেত্রে কাজে লাগবে না। চুল বাড়ার হার, গঠন, চুলের পুরুত্ব জন্মগতভাবেই নির্ধারণ হয়। তেমনিভাবে চুল পড়া নির্ভর করে বংশগত প্রভাব, হরমোন এবং বয়সের ওপর। এসবের কোনোটিই মাথার ত্বকের স্বল্প রক্ত সরবরাহের কারণে হয় না। কাজেই চুলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ম্যাসাজকে অনর্থক ব্যয় বলা যায়।
অনেকে বলেন, তেল দিয়ে মাথা ম্যাসাজ করাতে লাভ রয়েছে। আসলে কি তাই? উত্তর হচ্ছে, নিশ্চয়ই না। চুলের বৃদ্ধিতে এর কোনো ভূমিকা নেই। চুল হচ্ছে প্রোটিন উপাদান। আর তেল হচ্ছে চর্বিজাতীয়। এ দুয়ের একাত্মকরণ কীভাবে সম্ভব? বরং অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, চুলে খুশকি থাকা অবস্থায় তেল ব্যবহার করলে তা অবস্থাকে আরো প্রকট করে তোলে। তাহলে কি মাথা ম্যাসাজ করে কোনো লাভই নেই? এর উত্তরে বলতে হয়, চুল সম্পর্কিত কোনো সমস্যায় মাথা ম্যাসাজ কাজে দেয় না। তবে দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপ দূর করার ব্যাপারে ম্যাসাজ কিছুটা কাজ করতে পারে। ম্যাসাজ শিথিলায়নে সহায়তা করে এবং একপর্যায়ে তা উদ্দীপ্ত অনুভব এনে দেয়। সুতরাং অন্য কোনো উদ্দেশ্য নয়, শুধু প্রশান্তির জন্য মাথা ম্যাসাজ করতে চাইলে করতে পারেন।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ