জ্বর হলে কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?
জ্বর বিভিন্ন কারণে হয়। ভাইরাসের কারণে জ্বর হয়, আবার ব্যাকটেরিয়ার কারণেও জ্বর হয়। জ্বর হলে কখন চিকিৎসকের কাছে যাওয়া প্রয়োজন, এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৯০৭তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. আবু সাঈদ শিমুল।
বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : একটি শিশুর জ্বর হলে কখন চিকিৎসকের কাছে নেওয়া উচিত? আর কতক্ষণ কেবল প্যারাসিটামল খাইয়ে এবং পরিচর্যা করে শান্ত রাখা উচিত?
উত্তর : আসলে বেশির ভাগ জ্বরই কিন্তু ভাইরাস জ্বর। শীতের সময় বা ঋতু পরিবর্তনের সময় যে জ্বর হয়, তার বেশির ভাগই কিন্তু ভাইরাস। অন্যান্য যেসব জ্বর যেমন, টাইফয়েড, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া- এসবের সময় কিন্তু এখন নয়। সুতরাং এটি মায়েদের জন্য একটি স্বস্তির কারণ। আর যখন গরম পড়ে, বাইরের জিনিস খায়, তাদের কিন্তু টাইফয়েড হয়, জন্ডিস হয়। বর্ষার সময়ে হয় ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া। এই সময়ের শতকরা ৯০ ভাগ জ্বরই কিন্তু ভাইরাস জ্বর। খুব সাধারণ লক্ষণ থেকে কিন্তু এটি আমরা বুঝতে পারি।
অন্যান্য জ্বরে কিন্তু সাধারণত সর্দি-কাশি থাকে না। তবে ভাইরাস জ্বরে দেখা যায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সর্দিটা থাকে। আবার যদি টনসিলের কারণে ব্যথা হয় সেটি তো অন্য কথা। তবে যদি আমরা ভাইরাসের কথা চিন্তা করি, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের কারণে বেশি হয়। সেগুলোর ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে কিন্তু সর্দি থাকে। সুতরাং সর্দি থাকলে মোটামুটি আপনি বুঝতে পারবেন যে ভাইরাস জ্বর হয়েছে।
আরেকটি হলো কখন আমরা চিকিৎসকের কাছে নেব? প্রথমে আমরা অন্তত তিনদিন অপেক্ষা করব। জ্বরটা ১০২-১০৩ হয়ে যাচ্ছে কি না দেখব। যদি দেখি যে ১০০-১০১ এরকম থাকছে, সঙ্গে সর্দি রয়েছে, তাহলে বেশির ভাগ জ্বরের চিকিৎসা বাসাতেই সম্ভব। এ সময় আপনি প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ দেবেন। বয়স অনুযায়ী কতটুকু দেবেন সেটা ওষুধের প্যাকেটে লেখা রয়েছে। আপনি ছয় ঘণ্টা পরপর দেবেন। বেশি করে তরল খাবার খাওয়াবেন। এই সময় বাচ্চাদের খাওয়ার রুচি কমে যায়।
তবে যদি দেখা যায় বাচ্চাদের জ্বর অনেক হচ্ছে, সারা দিনে জ্বর কমছে না, যদি দেখা যায় তার র্যাশ দেখা দিয়েছে, জয়েন্ট ফুলে গিয়েছে, ব্যথা হচ্ছে, বাচ্চা অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে, বাচ্চা এত দুর্বল হয়ে যাচ্ছে যে হাঁটতে পারছে না, খিঁচুনি হচ্ছে এবং বাচ্চা একেবারেই দুর্বল, কিছুই খাচ্ছে না, বমি করে দিচ্ছে- শুধু মাত্র সেসব ক্ষেত্রেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। এ ছাড়া বেশির ভাগ জ্বর বাসাতেই চিকিৎসা করাতে পারবেন।