হলুদ খাওয়ার নয় উপকার
ভারতীয় উপমহাদেশে সাধারণত তরকারি রান্নার ক্ষেত্রে হলুদ ব্যবহার করা হয়। দক্ষিণ এশিয়া হলুদ গাছের আদি স্থান। এই মসলার রয়েছে কিছু গুণগত উপাদান। যদি নিয়মিত হলুদ খাওয়া হয়, তাহলে শরীরের ৯টি উপকার হয়। স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলদি ফুড হাউস জানিয়েছে হলুদের সেসব উপকারের কথা। নিয়মিত খাদ্যতালিকায় আধা চা-চমচ হলুদ ব্যবহারে এই উপকারগুলো পেতে পারেন আপনি।
১. দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ দূর করে
কম সময়ের প্রদাহ শরীরের জন্য উপকারী এবং এটি রোগের সঙ্গে লড়াই করে। তবে দীর্ঘ সময়ের প্রদাহ বা ক্রনিক ইনফ্লামেশন জীবননাশের কারণও হয়। হলুদ এই দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ দূর করতে সাহায্য করে।
২. অ্যান্টি অক্সিডেন্ট
হলুদের রয়েছে কারকিউমিন, এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ফ্রি রেডিকেলস দূর করতে সাহায্য করে। ফ্রি রেডিকেলস শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই ফ্রি রেডিকেলসের মাত্রা কমা শরীরের জন্য ভালো।
৩. মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাকে ভালো রাখে
বিডিএনএফ হরমোন অথবা ব্রেন-ডিরাইভড নিউরোট্রোপি মস্তিষ্কে নিউরোনের ভাগ এবং সংখ্যা বৃদ্ধিতে কাজ করে। বয়স বাড়লে মস্তিষ্কের এই কার্যকারিতা কমে যায়। যদি খাদ্যতালিকায় হলুদ থাকে, এই হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে যায়। এটি মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে, স্মৃতিশক্তি এবং বুদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করে।
৪. মস্তিষ্কের রোগ হওয়ার আশঙ্কা কমায়
মস্তিষ্কের বিডিএনএফ হরমোনের বৃদ্ধি মস্তিষ্কের রোগের ঝুঁকি কমায়। এটি মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। আর আমরা আগেই জেনেছি হলুদ এই হরমোনের নিঃসরণ বাড়ায়।
৫. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
রক্তনালির অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হলে রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রিত হয়, এতে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। খাদ্যতালিকায় হলুদ থাকলে রক্তনালীর কার্যক্রম ভালো থাকে। এর ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
৬. স্মৃতিভ্রম রোগ রোধে
প্রদাহ একটি বড় কারণ বয়স্কদের স্মৃতিভ্রম রোগের। হলুদ প্রদাহ কমিয়ে স্মৃতিভ্রম রোধে সাহায্য করে।
৭. আরথ্রাইটিসের ব্যথা রোধে
গাঁটের প্রদাহ আরথ্রাইটিসের একটি প্রচলিত কারণ। হলুদের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি বা প্রদাহরোধী গুণ। এটি আরথ্রাইটিস রোধে সাহায্য করে। হলুদে উপস্থিত কারকুমিন বিভিন্ন ক্রনিক (যেসব রোগ প্রতিকার করা যায় না) রোগের চিকিৎসায় বেশ কার্যকর। বিভিন্ন ধরনের পেটের সমস্যা রোধে হলুদ কাজ করে।
৮. ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে
ক্যানসারের কোষের বৃদ্ধি এবং ছড়িয়ে পড়া রোধে হলুদ সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এটি মুখগহ্ববরের ক্যানসার রোধে কার্যকরী।
৯. বিষণ্ণতা দূর করে
গবেষণায় বলা হয়, কারকুমিন বিভিন্ন ধরনের বিষণ্ণতা দূরকারী ওষুধের মতো সমান কাজ করতে পারে। তাই খাদ্যতালিকায় হলুদ রাখা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো।
তবে যেকোনো খাবার নিয়মিত গ্রহণের ক্ষেত্রে আপনার শারীরিক অবস্থা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।