ঘুমের সমস্যা কমানোর উপায়
কম বয়সের ছেলেমেয়ে থেকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা মেদবহুল বা রোগা যেকোনো মানুষই নিদ্রাহীনতা বা ইনসমনিয়ার শিকার হতে পারে। বর্তমানে নিদ্রাহীনতায় আক্রান্ত হচ্ছে অনেক মানুষ। একজন সুস্থ মানুষের প্রায় ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। আমরা সারা দিন যা শিখি, পড়ি, লিখি তা সবই ‘শর্ট টার্ম মেমরি’। রাতের ঘুমের সময় সবই সংরক্ষিত হয়। এই বিষয়টিকে ‘লং টার্ম মেমরি’ বলে। এই জন্য ঘুম প্রয়োজন।
কী কারণে নিদ্রাহীনতা হয়
অনেক কারণেই নিদ্রাহীনতা হতে পারে,তার মাঝে রয়েছে শারীরিক অসুস্থতা কিংবা মানসিক অসুস্থতা। যেমন : রাতে জ্বর আসা, কাশি, প্রদাহ, ব্যথা, উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্ট, থাইরয়েডের সমস্যা ইত্যাদি কারণে নিদ্রাহীনতা হয়। মানসিক অবসাদে নিদ্রাহীনতা হতে পারে। যেমন, কোনো ঘনিষ্ঠজনের মৃত্যু, প্রিয়জনের বিশ্বাসঘাতকতা ও বিচ্ছেদ, সামাজিক অসম্মান, মামলায় পরাজয়, আইন বা পুলিশের নিগ্রহ, কর্মজীবনে ধাক্কা, চাকরি চলে যাওয়া, ব্যবসায় লোকসান ইত্যাদি।
নিদ্রাহীনতায় ঘুমের ওষুধ
ঘুম না এলে একটা ঘুমের ওষুধ বা সিডেটিভ খাওয়ার অভ্যাস আমাদের অনেকের রয়েছে। কিন্তু তা ঠিক নয়? বাড়ির আর সবাই যখন ঘুমে অচেতন, চারদিক নিঃশব্দ, একাকী সেই সময়ে জীবনের সব নৈরাশ্য, আশা ভঙ্গতা সামনে এসে দাঁড়ায়। আর তা থেকে মুক্তি পেতে ঘুমের ওষুধ বেছে নেয় অনেকে। ঘুমের ওষুধ খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। ওষুধের মাত্রা ও প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সাধারণ মানুষ জ্ঞাত নয়। তাই নিজের মনমতো ওষুধ গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন। শারীরিক না মানসিক অসুস্থতা কোন কারণে অনিদ্রা হচ্ছে তা নির্ণয় করে ডাক্তারই আপনাকে প্রয়োজনে ওষুধ দেবেন।
ওষুধ ছাড়া নিদ্রাহীনতা এড়ানোর উপায়
ওষুধ ছাড়াও নিদ্রাহীনতা এড়ানো সম্ভব। যেমন :
* দিবানিদ্রা ত্যাগ করুন।
* বিকেলে আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা হাঁটুন।
* সন্ধ্যার পরে চা,কফি খাবেন না।
* বিছানায় যাওয়ার বেশ কিছু আগে রাতের খাবার খান।
* ঘুমাতে যাওয়ার আগে হালকা গরম পানিতে শরীর ধুতে পারেন।
* শোবার ঘর প্রয়োজন মতো ঠান্ডা রাখুন।
* বিছানায় শুয়ে টিভি দেখবেন না।
* হালকা মিউজিক শুনতে পারেন।
* ঘুমাতে যাওয়ার আগে দুধ খান।
* সবচেয়ে একঘেয়ে একটি বই পড়তে শুরু করুন।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপিকা, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ।