কারা রক্ত দিতে পারবেন, পারবেন না?
রক্ত দেওয়া নিয়ে অনেকের মনে অনেক ভ্রান্ত ধারণা কাজ করে। রক্ত দিলে শরীরের কোনো ক্ষতি হয় না। বরং রয়েছে নানা রকম উপকার। এতে একজন মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব।
গবেষণায় বলা হয়, নিয়মিত রক্ত দিলে বিশেষ কিছু ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। রক্ত দিলে শরীরে নতুন লোহিত কণিকা তৈরির হার বাড়ে। এতে অস্থিমজ্জার রক্ত উৎপাদন সক্রিয় থাকে।
রক্ত দিলে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে হয়। এতে হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। শরীরে হেপাটাইটিস-বি, হেপাটাইটিস-সি, জন্ডিস, ম্যালেরিয়া, সিফিলিস, এইচআইভি বা এইডসের মতো বড় কোনো রোগ রয়েছে কি না, সেটি রক্তদান উপলক্ষে জানা হয়ে যায়।
নিয়মিত রক্তদান করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। যাদের রক্তে আয়রনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে, তাদের জন্য রক্তদান এক ধরনের চিকিৎসা৷
তবে কারা রক্ত দিতে পারবেন আর কারা পারবেন না, এ নিয়ে কিছু নির্দেশিকা রয়েছে।
কারা রক্ত দিতে পারেন?
১) ১৮ থেকে ৬০ বছরের যেকোনো সুস্থ দেহের মানুষ রক্ত দান করতে পারবেন।
২) শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ নিরোগ ব্যক্তি রক্ত দিতে পারবেন।
৩) যাদের ওজন ৫০ কিলোগ্রাম কিংবা তার বেশি।
৪) কোনো ব্যক্তি একবার রক্ত দেওয়ার চার মাস পর আবার রক্ত দিতে পারেন।
কারা রক্ত দেবেন না?
১) রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ (পুরুষের ন্যূনতম ১২ গ্রাম/ ডে.লি. নারীদের ১১ গ্রাম ডে.লি.), রক্তচাপ ও শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক না থাকলে রক্ত দেওয়া উচিত নয়।
২) শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগ অ্যাজমা, হাঁপানি যাদের রয়েছে তারা রক্ত দিতে পারবে না।
৩) রক্তবাহিত জটিল রোগ, যেমন—ম্যালেরিয়া, সিফিলিস, গনোরিয়া, হেপাটাইটিস, এইডস, চর্মরোগ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, টাইফয়েড ও বাতজ্বর থাকলে রক্তদান করা যায় না।
৪) যাদের চর্মরোগ রয়েছে তারা দিতে পারবে না।
৫) নারীদের মধ্যে যারা গর্ভবতী এবং যাদের ঋতুস্রাব চলছে।
৬) সন্তান জন্মদানের পরবর্তী এক বছর পর্যন্ত।
৭) যারা কোনো বিশেষ ধরনের ওষুধ ব্যবহার করছেন। যেমন- অ্যান্টিবায়োটিক, কেমোথেরাপি, হরমোনথেরাপি ইত্যাদি।
৮) যাদের ছয় মাসের মধ্যে বড় কোনো অপারেশন বা বড় কোনো দুর্ঘটনা হয়েছে।
লেখক : চিকিৎসক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।