ঈদের খাবার : কীভাবে খেলে ভালো থাকবে স্বাস্থ্য?
ঈদ মানে খুশি, আনন্দ। আর এ আনন্দের একটি বড় জায়গা জুড়ে রয়েছে মজার খাবার-দাবার। এক মাস রোজা রাখার পর হঠাৎ করে ঈদের আনন্দে অনেক বেশি খেয়ে আপনি যেন অসুস্থ হয়ে না পড়েন সেই কারণে খাওয়া-দাওয়ার ক্ষেত্রে চাই বাড়তি সতর্কতা।
ঈদের সকালে নামাজের আগে অনেকেই সুন্নত হিসেবে মিষ্টি খান। আর এই মিষ্টান্ন যদি ঘরে বানানো দুধের কোনো খাবার হয়, তবে তা খুবই ভালো। যেমন : দুধের সেমাই বা পায়েস। এরপর নামাজের পর সাধারণত বাড়ির সবাই মিলে একসঙ্গে নাস্তা করেন। মনে রাখবেন, সারাদিন যাতে নানা রকম খাবার উপভোগ করতে পারেন, তাই সকালের নাস্তাতে হালকা খাবার খাওয়াই ভালো। রুমালি রুটি বা তেল ছাড়া পরোটা, সঙ্গে সবজির কোনো মজাদার আইটেম, যেমন, দম আলু বা মিক্স লাবড়া বা সবজির কোরমা থাকতে পারে ম্যানুতে। আর সঙ্গে ডিম বা ডিমের কোনো মজাদার রেসিপি থাকলে ভালো।
গ্রীষ্মকালে ঈদ হচ্ছে, তাই নাস্তার পর গরম চা পান না করাই ভালো। মৌসুমি ফল বা ফলের জুস নাস্তায় খেতে পারেন।
ঈদের দুপুরে অনেকেই নিজের বাড়িতে খায়, আবার অনেকেই আত্মীয়দের বাড়িতে খায়। যেখানেই খান, মনে রাখবেন, এই গরমে অনেক খাবার খেলে বা পেট ভরে খাবার খেলে তা হজমে অসুবিধা করতে পারে। মুরগি বা মাছের কোনো মজাদার রেসিপি দুপুরের ম্যানুতে রাখতে পারেন। ফ্রুট সালাদ বা টক দইয়ের মাঠা হজমে সহায়ক হয়। কোমল পানীয় কোনোভাবেই খাবেন না। সাদা পোলাও এ গ্রীষ্মের জন্য বিরিয়ানির তুলনায় ভালো। তবে মনে রাখবেন, জোর করে মজা লাগলেও খাবার খাবেন না। এতে বদ হজম বা ডায়রিয়া হতে পারে।
ঈদের রাতের ম্যানু বা খাবার নির্ভর করে সারাদিনের খাবার গ্রহণের পর আপনার চাহিদার ওপর। তবে রাতে দুপুরের চেয়ে একটু হালকা ম্যানু হলে স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। সাদা ভাতের সঙ্গে গরু বা মুরগির কোনো সুস্বাদু রেসিপি থাকতে পারে আপনার ম্যানুতে। এ ছাড়া মাছের বা সবজির রেসিপিও খেতে পারেন রাতের খাবারে।
ঈদের মিষ্টান্ন অনেকের কাছেই প্রিয়। বিশেষ করে ঘরে বানানো নানা রকম ডেজার্ট ঈদের ম্যানুতে রাখা যায়। তবে তেলে ভাজা আর শিরায় ডুবানো মিষ্টান্ন না রাখাই ভালো।
ঈদের জন্য বেশ কিছু মজাদার রেসিপির মধ্যে আপনি চাইলে রাখতে পারেন, মুরগির রোষ্ট বা কোরমা, সবজির কোরমা বা দম, সবজি টিকিয়া, মাছের কাটলেট বা চপ, মাছের কোরমা বা স্মোক, মাছের গ্রিল বা মুরগির গ্রিল, সবজি পোলাও, গ্রিন সালাদ বা ফ্রুট সালাদ, বিফ স্টেক বা গ্রিল, বিফ কাবাব, ফ্রুট কাস্টার্ড, সেমাই, পায়েস, ফিরনি, ছানার হালুয়া, দুধ মালাই ইত্যাদি।
প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ কাটুক অনেক আনন্দে। আর খাবার যাতে উপভোগ করতে পারেন স্বাচ্ছন্দে তাই ঈদ ম্যানু ভাবুন পুষ্টিকে মাথায় রেখে।
লেখক : পুষ্টিবিদ, থাইরোকেয়ার বাংলাদেশ।