দীর্ঘ মেয়াদে কিডনি রোগ কেন হয়?

দীর্ঘ মেয়াদে কিডনি বিকল হওয়ার সমস্যা হলো ক্রনিক কিডনি রোগ বা দীর্ঘ মেয়াদে কিডনি রোগ। কী কারণে এ সমস্যা হয়?
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৫৭৫তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. এম এ সামাদ। বর্তমানে তিনি বিআরবি হসপিটালে কিডনি বিভাগের প্রধান পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : দীর্ঘ মেয়াদে কিডনি রোগের কারণ কী?
উত্তর : ক্রনিক কিডনি ডিজিসের প্রধান কারণগুলো আমাদের জীবনধারার সঙ্গে জড়িত। কিডনি বিকল হওয়ার অন্যতম দুটো কারণ হলো ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ। আরেকটি হলো নেফ্রাইটিস বা গ্লুমেরুলোনেফ্রাইটিস। প্রথম দুটো সম্পূর্ণ জীবনধারার সঙ্গে একেবারে জড়িত। গ্লুমেরুলোনেফ্রাইটিসও কিন্তু জীবনযাপনের ধরন, খাওয়া-দাওয়ার সঙ্গে জড়িত।
এ ছাড়া অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে ধূমপান। ধূমপানের সঙ্গে সরাসরি কিডনি রোগ জড়িত। অন্যদিকে যদি বলি ওজন যাদের বেশি, তাদের ওজনের সঙ্গে সরাসরি ছাঁকনির একটি রোগ রয়েছে। এটি হলো এফএসজিএস। অর্থাৎ এই ওজন বেশির কারণে সরাসরি কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ওজন বেশি যেমন সরাসরি কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত করে, তেমনি ওজন বেশির কারণে ডায়াবেটিস হয়। উচ্চ রক্তচাপও হয়ে থাকে।
আমরা যে খাবার খাই, এতে যদি অতিরিক্ত কোলেস্টেরল থাকে, হার্ট ডিজিস হয়, সেটি আমরা জানি। কিন্তু কোলেস্টেরল যে কিডনির রক্তনালিকে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত করে, সেটি আগে চিন্তা করিনি। এখন দেখা যাচ্ছে যে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত করে। তেমনিভাবে আমাদের একটু ব্যথা হলেই আমরা ব্যথার ওষুধ খাই। দীর্ঘদিন ধরে এই ব্যথার ওষুধ খাওয়া হলে এটিও ক্রনিক কিডনি ডিজিস তৈরি করে। আবার অনেক সময় দেখা যায়, তীব্র মাত্রার যে ব্যথা ওষুধ রয়েছে, এনএসআইডি যেগুলোকে বলা হয়, এগুলো একটা-দুটো খাওয়ার পরও যাদের হাইপার সেনসিটিভিটি রয়েছে, এদের হঠাৎ কিডনি রোগ তৈরি হয়ে যায়। কাজেই এগুলো জীবনযাপনের ধরনের মধ্যেই পড়ে। আমার একটু ব্যথা হয়েছে। আমি দৌড়ে গিয়ে ওষুধ খাচ্ছি। আমি কিন্তু পারতাম একটু ব্যায়াম করে, ফিজিওথেরাপি করে, হিট দিয়ে ব্যথাটা কমিয়ে রাখতে।
কাজেই জীবনযাপনের সঙ্গে কিডনি রোগের সম্পর্ক অনেক গভীর।
পাশাপাশি বলি, একটি রোগ রয়েছে, কার্ডিও রেনাল সিনড্রোম বলা হয়। অর্থাৎ যাদের হার্টের রোগ রয়েছে, হার্টের রোগের কারণে তার কিডনির রোগ হচ্ছে। কিডনিতে পর্যাপ্ত রক্ত যেতে পারছে না, এতে তার কার্যক্ষমতা ব্যাহত হচ্ছে। আবার উল্টো দিকে এটিও রয়েছে, যাদের খুব স্বল্প মাত্রায় কিডনি রোগ রয়েছে, তাদের এটি থাকার জন্যও হার্টের রোগ বহুগুণে বেড়ে যেতে পারে। সাধারণ মানুষের তুলনায় ১০০ গুণ বেশি তাদের হার্টের রোগ হওয়ার প্রবণতা থাকে।