প্যাকেটজাত খাবারে থাকে বেশি লবণ
লবণ স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এর অভাবে বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়। কিন্তু অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ দেহে উচ্চ রক্তচাপ তৈরি করে; যা স্ট্রোক এবং হৃদরোগের ঝুকি বাড়িয়ে দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের হেলথ অফিশিয়াল প্রতিবেদনে বলা হয়, অধিকাংশ প্যাকেটজাত খাবারে প্রচুর পরিমাণে লবণ ব্যবহার করা হয়। এর ফলে মানবস্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
ইউএস সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের এপিডেমিওলজিস্ট এবং গবষেণাকর্মটির অন্যতম গবেষক লিন্ডা সিয়েব জানান, ৫০ শতাংশ দোকানের খাবারে বেশি পরিমাণ লবণ বা সোডিয়াম পাওয়া যায়, যা যুক্তরাষ্ট্র ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএর) নির্দেশিত মাত্রা অতিক্রম করে।
এফডিএর মতে, প্রতিটি প্যাকেটজাত খাবারে ৪৮০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম থাকতে পারে। যেমন : পনির রুটি, ঠান্ডাজাতীয় খাবার ইত্যাদি। তবে কিছু খাবারে ৬০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম থাকতে পারে। যেমন : পাস্তা, স্যান্ডউইচ ইত্যাদি।
লিন্ডা ও তাঁর গবেষকদল ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ৫২টি মার্কেটের ওপর এই গবেষণা চালান। এর মধ্যে গুদাম, দোকান এবং ওয়ালমার্টকে বাদ দেওয়া হয়। তবে গবেষণাটি প্রকাশ করা হয় এ বছরের এপ্রিলে, প্রিভেন্টিং ক্রনিক ডিজিস জার্নালে।
গবেষণায় দেখা যায়, ৭০ শতাংশ পিৎজা, পাস্তা, ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ মিশ্র খাবার, স্যান্ডউইচ এফডিএর নির্দেশিত সোডিয়ামের মাত্রা মেনে চলেনি। কেবল ১০ শতাংশ রুটি, পনির, মসলাদার খাবার এই নির্দেশনা মেনে চলেছে।
ইউএস ডায়াটারি গাইডলাইন্স ফর আমেরিকানের মতে, একজন ব্যক্তির দৈনিক এক চা-চামচ লবণ খাওয়া প্রয়োজন।
ডক্টর লিন্ডা বলেন, ‘আমাদের দৈনন্দিন লবণের অধিকাংশটুকু আসে রেস্তোরাঁর খাবার থেকে এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে। দুই জায়গাতেই সোডিয়ামের মাত্রা প্রচুর থাকে। তাই এসব খাবার গ্রহণ করার আগে প্যাকেটের গায়ে সোডিয়ামের পরিমাণটুকু জেনে নেওয়া জরুরি। এসব খাবারের পাশাপাশি ফল ও সবজি খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে।’
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টিবিদ কনি ডিকমেন জানান, প্যাকেজজাত সংরক্ষিত খাবারে অনেক বেশি সোডিয়াম থাকে। তাই এটিকে স্বাস্থ্যকর বলা যায় না।
তবে লিন্ডা ২০০৯ সালে পরিচালিত গবেষণায় দেখান, খাদ্য প্রস্তুতকারকরা চেষ্টা করছেন খাবারে সোডিয়ামের পরিমাণ কমাতে।
গবেষকদের মতে, প্যাকেটজাত খাবার গ্রহণের আগে ভোক্তাদের কিছু পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। যেমন : প্যাকেটের গায়ে সোডিয়ামের পরিমাপ দেখা। প্যাকেটজাত খাবারের পাশাপাশি সবজি খাওয়ার অভ্যাস করা। রেস্তোরাঁয় না খেয়ে ঘরে তৈরি খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা। সবচেয়ে ভালো হয়, প্যাকেটজাত খাবার কম ব্যবহার করতে পারলে, শুধু যখন খুব প্রয়োজন তখনই ব্যবহার করতে পারলে ভালো।