মোটা মানুষদের স্মৃতিশক্তি ভালো?
মধ্য বয়সের যেসব মানুষের ওজন কম থাকে বা যাদের উচ্চতার তুলনায় ওজন কম হয় তাদের বৃদ্ধ বয়সে গিয়ে ডিমেনসিয়া (এই রোগে চিন্তা এবং স্মৃতিতে সমস্যা হয়) রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের গবেষকরা এ কথা জানান। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিতে প্রকাশিত হয়েছে এই প্রতিবেদন।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের দুই মিলিয়ন লোকের ওপর এই গবেষণাটি করা হয়। গবেষকরা বলেন, এতদিন ভুলভাবে বলা হতো যাদের ওজন বেশি তাদের ডিমেনসিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, যাদের বিএমআই (বডি মাস ইনডেস্ক) ২০-এর নিচে তাদের ৩৪ শতাংশ ডিমেনসিয়া হওয়ার আশঙ্কা আছে। যারা অনেক বেশি স্থূল, যাদের বিএমআই ৪০-এর ওপরে তাদের ডিমেনসিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অন্যদের চেয়ে ২৯ শতাংশ কম। তবে ২০ থেকে ২৫ মাত্রাকে সঠিক বিএমআই বলা হচ্ছে। গবেষকরা বলেন, তাই ভেবে দেখুন কম ওজন না বেশি ওজনের লোকেরা ভালো!
তবে গবেষণাটির প্রধান লেখক ড. নওয়াব কিজিলবাস বলেন, ‘তবে এ বয়সে ওজনাধিক্যও ঠিক নয়। এর ফলে আপনি অন্যান্য সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।’
ড. কিজিলবাস বলেন, ডিমেনসিয়া হওয়ার কারণ কেবল কম ওজন নয়। বংশগত কারণ, খাবারদাবারের ধরন, নিয়মিত ব্যায়াম না করা এগুলোও এই রোগের জন্য দায়ী হতে পারে। এ ছাড়া ভিটামিন ই এবং ভিটামিন ডি-র অভাবেও ডিমেনসিয়া হয়।
যুক্তরাজ্যের আলঝাইমার রিসার্চের গবেষক সিমন রিডলি বলেন, ডিমেনসিয়ার একমাত্র কারণ কম ওজন বা ওজনাধিক্যই এই রোগ প্রতিরোধ করার উপায়-এটা প্রমাণ করা গবেষণার লক্ষ্য নয়। অনেক গবেষণায় এও বলা হয়, ওজনাধিক্যও কখনো কখনো ডিমেনসিয়ার কারণ হয়। তাই বিষয়টি নিয়ে এখনো বিতর্ক রয়েছে।
ড. সিমন রিডলি বলেন, ডিমেনসিয়া রোধের উপায় হচ্ছে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, ভারসাম্য পূর্ণ ডায়েট পালন করা, নিয়মিত ব্যায়াম করা, ধূমপান এড়িয়ে চলা এবং রক্তচাপ নিয়মিত পরীক্ষা করা।
তবে ড. নওয়াব ও তাঁর দলের করা এই গবেষণাটিই এই বিতর্কের শেষ ফলাফল নয় বলে জানান যুক্তরাষ্ট্রের সানি ডাউন স্টেট মেডিক্যাল সেন্টারের প্রফেসর ডেবোরাহ গুস্তাফসন। গবেষকদের মতে, বেশি বা কম নয়, ওজনের ভারসাম্যই পারে বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ করতে।
আর ওজন বেশি থাকলে হয়তো স্মৃতিশক্তি কম হ্রাস পায় কিন্তু অন্যান্য শারীরিক সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বাড়ার কথাও স্মরণ করিয়ে দেন গবেষকরা।