গর্ভকালীন ঝুঁকির মাত্রা যখন বেড়ে যায়
হাই রিস্ক প্রেগনেনসি বা গর্ভকালীন উচ্চ ঝুঁকি সবসময়েই একটি বড় সমস্যা। এর ফলে মা এবং শিশু দুজনেই স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তে পারে। এ অবস্থা থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এনটিভির স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে নানা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজের অবস অ্যান্ড গাইনি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ফেরদৌস মহল রুনি।
প্রশ্ন : হাই রিস্ক প্রেগনেনসি বা গর্ভকালীন উচ্চ ঝুঁকি কী?
উত্তর : প্রতিটি গর্ভধারণই আসলে ঝুঁকিপূর্ণ। অর্থাৎ গর্ভধারণের পুরো সময়টাতেই ঝুঁকি রয়েছে। তবে ১৬ বছরের নিচে ও ৩০ বছরের ওপরে গর্ভধারণ করলে ঝুঁকি বেশি থাকে। যেসব মায়ের পাঁচটি কিংবা তার বেশি সন্তান হয়, যাকে মেডিকেল টার্মে বলা হয় গ্রেন মাল্টি, সেটি হাই রিস্ক প্রেগনেনসি। যদি গর্ভকালীন কোনো মায়ের ব্লাডপ্রেশার অনেক বেশি হয় এবং এর সঙ্গে খিঁচুনি থাকে, সেটিকে হাই রিস্ক প্রেগনেনসি বলে, যাকে মেডিকেলের ভাষায় ‘একলামশিয়া’ বলা হয়। কোনো নারীর আগে যদি সিজার হয়, আবার যদি সে বেবি কনসিভ করে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ না নেয়, সেটি হাই রিস্ক হতে পারে। গর্ভধারণের সময় লক্ষ রাখতে হবে যদি মায়ের হার্ট ডিজিজ থাকে, তাহলে সেটিও হাই রিস্ক।
প্রশ্ন : এর ফলে কী সমস্যা হয়?
উত্তর : হাই রিস্কের ফলে মায়ের মৃত্যুর হার বেড়ে যায়। শিশুর মৃত্যু হয় বা অটিস্টিক শিশু জন্ম নিতে পারে। এ ধরনের ডেলিভারি মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। পাশাপাশি পরিবার ও সমাজের জন্যও ক্ষতিকর।
প্রশ্ন : এটি কেন হয় এবং এর প্রতিকার কী?
উত্তর : সচেতনতা বা অ্যাওয়ারনেসের অভাবের কারণে এটি হয়। একজন নারী যখন গর্ভবতী হবে, তখন তার পাশাপাশি পরিবারের লোকদের সচেতন হতে হবে। শরীরে পুষ্টির চাহিদা ঠিক রাখতে হবে। খাওয়া-দাওয়া করতে হবে। নিয়মিত চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রাখতে হবে। যদি ১২ থেকে ১৩ বার চেকআপ করা সম্ভব নাও হয়, অন্তত চারবার চেকআপ করাতে হবে। তাহলে বোঝা যাবে, হাই রিস্ক আছে কি না। তাদের কোথায় ডেলিভারি করতে হবে বা কীভাবে ডেলিভারি করতে হবে, কীভাবে ডেলিভারিটি সেভ করা যাবে—এটি বুঝতে পারলে অনেক ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব। আর হাই রিস্ক প্রেগনেনসি এড়াতে সরকারের সচেতনতাও খুব প্রয়োজন।
প্রশ্ন : প্রি-একলামশিয়া ও একলামশিয়া কী?
উত্তর : একজন প্রেগনেন্ট নারীর যদি ব্লাডপ্রেশার বেশি থাকে, ইউরিনে ইনফেকশন হয়, সেটিকে প্রি-একলামশিয়া বলে। এ ক্ষেত্রে শরীরে পানি আসতে পারে, আবার নাও আসতে পারে। আর যদি ব্লাডপ্রেশার অনেক বেড়ে যায় এবং তার সঙ্গে খিঁচুনি থাকে, সেটিকে একলামশিয়া বলে। এ জাতীয় সমস্যা হলে অবশ্যই দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।