মুখগহ্বরের পরিচর্যা
সাধারণত মুখগহ্বর পরিষ্কার রাখার জন্য আমরা দাঁত ব্রাশ করে থাকি। আমরা মনে করি মুখের পরিছন্নতার জন্য দাঁত ব্রাশই যথেষ্ট। তবে দাঁত ব্রাশের পাশাপাশি মুখগহ্বরের পরিছন্নতার জন্য মাউথ ওয়াশের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আমাদের মুখ প্রায় ৬৪ প্রজাতির তিন লাখেরও বেশি উপকারী এবং অপকারী অণুজীবের আবাসস্থল। অপকারী অণুজীবগুলো দাঁত, মাড়ি ও মুখের বিভিন্ন ধরনের রোগের জন্য দায়ী। সে জন্য মুখগহ্বরের যত্ন অপরিহার্য। জিহ্বা, তালু ও ঝিল্লি (mucous membrane), মাড়ি ও দাঁত, গলনালির অংশ ও লালাগ্রন্থি (salivary glan) ইত্যাদি মুখগহ্বরের অংশ।
মুখগহ্বর অপরিছন্ন হওয়ার কারণ
মুখগহ্বরে অনেক অংশজুড়ে থাকে জিহ্বা। এর মাধ্যমে আমরা খাবারের স্বাদ অনুভব করি। তাই জিহ্বা যত পরিষ্কার থাকবে খাবারের স্বাদ তত বেশি অনুভব করা যাবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, পান-সুপারি খাবার পর অন্য কোনো খাবার খেলে খাবারের স্বাদ তেমনভাবে অনুভূত হয় না। পান-সুপারি, জর্দা, চুন মিলে জিহ্বা এবং এর ওপর প্রলেপ তৈরি করে। যার জন্য জিহ্বার স্বাদ গ্রহণের মাধ্যমগুলো সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। এ ছাড়া আঠালো নরম খাবার, ফাস্ট ফুড, ধূমপান, মদ্যপানে এই ধরনের প্রলেপ পড়তে পারে। অপরদিকে আঁশযুক্ত খাবার খেলে এই ধরনের প্রলেপ অনেক কম পড়ে।
আবার অনেক সময় ধরে কথা বললে, দীর্ঘ সময় ধরে খাবার কিংবা পানীয় গ্রহণ থেকে বিরত থাকলে জিহ্বার ওপর নানা ধরনের সালফার-জাতীয় পদার্থের প্রলেপ পড়ে। এ ছাড়া ভ্রমণে, নিদ্রাকালীন মুখে লালা নিঃসরণ কম হয়, সে কারণে এ ধরনের বিষয় তৈরি হয়। এর ফলে মুখে গন্ধ সৃষ্টি হয়। মনে রাখা দরকার, শুকনো মুখ মানে দুর্গন্ধযুক্ত মুখ।
প্রতিরোধ
আমরা খাবারের পরপর যদি জোরে কুলিকুচি করি, তাহলে খাবারের বাড়তি অংশ মুখে থাকবে না। ফলে জিহ্বা ও মাড়িতে প্রলেপ তৈরি কম হবে। আঁশযুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে। এ ছাড়া বাজারে যেসব মাউথ ওয়াশ কিনতে পাওয়া যায়, সেগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। মাউথ ওয়াশের পাশাপাশি লবণ-গরম পানির ব্যবহার খুবই কার্যকর ও নিরাপদ। মুখগহ্বর পরিষ্কার রাখলে মুখ, মাড়ি ও দাঁত ভালো থাকবে।
ডা. আহমাদ বুলবুল : পিজিটি ট্রেইনি, ঢাকা ডেন্টাল কলেজ।