দিনে কতবার ঢেকুর তোলা স্বাভাবিক?
খাবার খেলে যে ঢেকুর উঠবে এটা তো খুব সাধারণ একটা বিষয়। পেটের ভেতরে জমে যাওয়া গ্যাস বের করে দেওয়ার একটি পদ্ধতি হলো ঢেকুর ওঠা। কিন্তু বার বার সবার সামনে ঢেকুর তুললে একটু অস্বস্তি তো হয়ই। এজন্য একটু সতর্ক হতেই হবে। কারণ, এক্ষেত্রে সাধারণ হজমের সমস্যার আশঙ্কা থাকে; তাই এ বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
চিকিৎসকদের মতে, ঢেকুর হলে খাবার পরিপাকের সঙ্গে যুক্ত স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া। যা কোনো দিক থেকেই ক্ষতিকর নয়। তবে, একটা মানুষ কতবার ঢেকুর তুলবেন তা নির্ভর করে হজমের উপর। অনেকে বিশেষ শব্দে ঢেকুর তোলে, এক্ষেত্রে ধরে নেওয়া হয় তাঁদের হজমের জোরদার কোনও সমস্যা রয়েছে।
গবেষণা বলছে, দিনে ৩০ বার পর্যন্ত ঢেকুর তোলা স্বাভাবিক। তার বেশি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বিশদ জানতে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। বেশির ভাগের ক্ষেত্রেই তা হজম সংক্রান্ত সমস্যার সঙ্গে জড়িত বলে জানা গিয়েছে।
ঘন ঘন ঢেকুর তুললে শুধু হজমের সমস্যা নয়, অন্য আরও অনেক রোগেরই কবলে পড়তে পারেন। গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ, বাওয়েল সিন্ড্রম বা ‘আইবিএস’ মতো সমস্যায় এমন লক্ষণ দেখা যায়।
অনবরত ঢেকুর তুললে কোলন ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। যদিও ঢেকুরের সঙ্গে কোলন ক্যানসারের সম্পর্ক নেই। তবে কোলন ক্যানসার শরীরে বাসা বাঁধলে পরিপাক ক্রিয়ায় গোলমাল হয়। গ্যাস হয়, সেই থেকেই ঘন ঘন ঢেকুর ওঠে। তাই এক্ষেত্রে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এ ছাড়াও সারাক্ষণ বমি বমি ভাব, গা গুলিয়ে ওঠা, ওজন কমে যাওয়াও কোলন ক্যানসারের উপসর্গ হতে পারে। তাই এই উপসর্গ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এ ছাড়া পেটের নানা অসুখ হলেও খাবার ঠিক মতো হজম হয় না। সেক্ষেত্রেও হতে পারে এই ঘন ঘন ঢেকুর!
খাওয়া-দাওয়ায় অনিয়ম, শারীরিক কসরত না করা, বাড়তি ওজন, ঘরে বানানো খাবারের পরিবর্তে প্রক্রিয়াজাত খাবারদাবার খাওয়া ও অতিরিক্ত মানসিক চাপ— এসব কারণে অল্প বয়স থেকেই কোলন ক্যানসার হানা দিচ্ছে মানুষের শরীরে।
অল্প অল্প করে খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। দু’ঘণ্টা অন্তর হালকা কিছু খাবার খেতে পারলে এই ধরনের সমস্যা হবে না। দ্বেগ, অবসাদ বা মানসিক চাপ থেকেও কিন্তু এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। তাই নিয়মিত মেডিটেশন, শরীরচর্চা করতে পারলে ভালো।
গ্যাসের সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চললে অথবা মলের রং পরিবর্তন হলে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন। কোনো কিছু খেলেই যদি ঢেকুর ওঠে, খাবার খেলে যদি সমস্যা হয় তাহলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
বিশেষ কিছু খাবার রয়েছে, যা খেলে গ্যাসের সমস্যা অনেকাংশে বেড়ে যায়। তাই বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রোকোলি, শীম এবং কার্বোনেটেড পানীয় বর্জন করুন। বাইরের খাবার ভাজাভুজি একেবারেই খাওয়া চলবে না। হালকা সেদ্ধ খাবার খান। জাঙ্ক ফুড একদম পরিহার করতে হবে।