‘ওয়েলবিইং প্রকল্প’ উদ্বোধন: জুলাই ভুক্তভোগীদের পুনর্বাসনে উদ্যোগ

জুলাই ২০২৪-এর অভ্যুত্থান ভুক্তভোগীদের জন্য পুনর্বাসন ও মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা (এমএইচপিএসএস) জোরদারে উদ্বোধন করা হলো ‘ওয়েলবিইং প্রকল্প’। রাজধানীর জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ও হাসপাতাল (এনআইএমএইচ)-এ এ কর্মশালার আয়োজন করে হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (এইচআরডিসি)। সহযোগিতায় ছিল ডিগনিটি এবং অর্থায়নে ডেনমার্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (ড্যানিডা)।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শহীদ মাহমুদুর রহমান সৈকতের পিতা মাহবুবুর রহমান বশির। তিনি ভুক্তভোগীদের পাশে থাকার দায়িত্বকে মানবিক ও সামাজিক কর্তব্য হিসেবে তুলে ধরেন। স্বাগত বক্তব্য দেন এইচআরডিসির সচিব ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহবুল হক। মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার চিত্র উপস্থাপন করেন সংস্থাটির পরিচালক মোঃ জিয়ানুর কবির।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যান্ডার্স কার্লসেন, বাংলাদেশে ডেনমার্ক দূতাবাসের উপ-প্রধান। তিনি বলেন, সংঘাত-প্রভাবিত মানুষের জন্য এমএইচপিএসএস সেবা ও পুনর্বাসনে ডেনমার্কের প্রতিশ্রুতি অব্যাহত থাকবে।
প্রধান অতিথি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ সাইদুর রহমান বলেন, টেকসই সহায়তার জন্য সরকারি সংস্থা, কর্মসংস্থান ব্যাংক, এনজিও ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ আবু জাফর জানান, ৪০ জন ভুক্তভোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানো হয়েছে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠান ও নিটোরের সহায়তায়। তিনি এইচআরডিসির উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং সহায়তা অব্যাহত রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কামাল আকবর জানান, মোট ১২,৪৫৪ জন ভুক্তভোগীর বিষণ্নতা ও মানসিক আঘাত থেকে পুনর্বাসন জরুরি। তিনি বলেন, কার্যকর কর্মসূচি নকশার জন্য গবেষণা অপরিহার্য।
সংস্থাটির সাধারণ সম্পাদক সামসি আরা জামান বলেন, মানসিক অসুস্থতাকে ‘পাগলামি’ নয়, একটি চিকিৎসাযোগ্য অসুস্থতা হিসেবে দেখা জরুরি। তিনি যৌথ সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
কর্মশালায় ভুক্তভোগীরা নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে চিকিৎসা, পুনর্বাসন, অন্তর্ভুক্তি ও মর্যাদা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। উপস্থিত ছিলেন সিভিল সোসাইটি, এনজিও ও সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা—জেনা দেরাখশানি হামাদানি (আইসিবিবিআর, ডি), সুমাইয়া তাসনিম (সোচ্চার), ফরহাদ হোসেন (লিডো), মোঃ মাসুদ রানা সৌরভ (জুলাই যোদ্ধা সংসদ), আমিনুর রসুল (পিএইচএম), মোঃ আনোয়ার হোসেন (এনজিও বিষয়ক ব্যুরো)।
তারা অধিকারভিত্তিক ও ভুক্তভোগী-কেন্দ্রিক পুনর্বাসন, মানসিক সহায়তা এবং দীর্ঘমেয়াদি যত্নের কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন। এনআইএমএইচ-এর পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে কর্মশালাটি সফলভাবে ‘ওয়েলবিইং প্রকল্প’-এর ভিত্তি স্থাপন করে, যা ভুক্তভোগীদের মানসিক, সামাজিক ও পুনর্বাসন সংক্রান্ত চাহিদা পূরণে যৌথ প্রচেষ্টার নতুন দিক উন্মোচন করে।