ঠান্ডাজনিত রোগ এড়াতে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের
দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপমাত্রা কমতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও সরকারী কর্মকর্তারা বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছেন, যেন শীতকালীন রোগ থেকে শিশু ও প্রবীণ ব্যক্তিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়।
গতকাল মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) প্রফেসর ড. শেখ সাইদুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শীতল আবহাওয়ায় নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হাঁপানি ও সাধারণ সর্দি-কাশির মতো শ্বাসনালি সংক্রান্ত সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। এই ধরনের রোগ বিশেষ করে ছোট শিশু ও প্রবীণদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।’
শীতজনিত রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য চলাচল এবং খাদ্যাভ্যাসে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করতে তিনি সবাইকে আহ্বান জানান।
ডিজিএইচএস ইতোমধ্যেই শীতকালীন রোগ প্রতিরোধের বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য ব্যাপক প্রচারণা শুরু করেছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, পাঁচ বছরের নিচের শিশু, প্রবীণ নাগরিক এবং দীর্ঘমেয়াদী রোগ যেমন ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যা ও সিওপিডি আক্রান্ত ব্যক্তিরা শীতকালীন রোগের ঝুঁকিতে থাকে।
শিশু বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে ও শীতল বাতাসের সংস্পর্শে থাকা স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। একই সময়ে, প্রবীণ ব্যক্তিরা শীতকালে জয়েন্টে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট ও রক্তচাপের ওঠানামার মতো সমস্যা অনুভব করতে পারেন।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা অভিভাবকদের পরামর্শ দিয়েছেন, শিশুদের জন্য উষ্ণ পোশাক নিশ্চিত করতে বিশেষ করে সকালে বা সন্ধ্যায় বাইরে যাওয়ার সময়। এ ছাড়া নিয়মিত হাত ধোয়া ও ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা ঋতুকালীন ভাইরাসের সংক্রমণ কমাতে সহায়ক।
তাদের আরও পরামর্শ, শিশুদের অসুস্থ ব্যক্তিদের থেকে দূরে রাখতে হবে এবং পুষ্টিকর খাবার যেমন ফল, সবজি এবং উষ্ণ তরল জাতীয় খাবার দিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে।
ডাক্তাররা নবজাতককে শীতল বাতাসে না বের করার পরামর্শ দেন এবং ঘরের পরিবেশ উষ্ণ হলেও পর্যাপ্ত বায়ুচলাচল নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছেন।
প্রবীণ ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ সতর্কতা যেমন উষ্ণ পোশাক, মোজা ও টুপি ব্যবহার করা এবং শীতজনিত জটিলতা প্রতিরোধে বাড়ির ভিতরে উষ্ণ থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া সকালের কুয়াশার সময় বাইরে না যাওয়া, রাতে কম্বল বা গরম পানির ব্যাগ ব্যবহার করে শরীরের উষ্ণতা বজায় রাখা, পর্যাপ্ত পানি পান করা এবং উষ্ণ তরল, হার্বাল চা ও সুষম খাদ্য গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকরা দীর্ঘমেয়াদী রোগের তদারকি এবং নির্ধারিত ওষুধ সময়মতো গ্রহণ নিশ্চিত করার বিষয়েও পরামর্শ দিয়েছেন।
স্থানীয় ক্লিনিক এবং কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলি সচেতনতা প্রচারণা শুরু করেছে, বিশেষ করে গ্রামীণ এবং নিম্ন আয়ের এলাকায় যেখানে গরম পোশাক এবং উপযুক্ত বাসস্থান সীমিত।
যদি ক্রমাগত জ্বর, শ্বাসকষ্ট বা পানিশূন্যতার মতো লক্ষণ দেখা দেয় বিশেষ করে ছোট শিশু এবং বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে জনগণকে পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)