তুরস্কে এক কক্ষেই বন্দি তিন প্রজন্ম
তিন তলা ভবন, সেখানেই থাকত পরিবারটির সদস্যরা। সুখেই কাটছিল জীবন। তবে, গত সোমবারের ভয়াবহ ভূমিকম্পে তাদের জীবন আজ এলোমেলো। ভূমিকম্পে ওই পরিবারের তিন সদস্য জীবিত অবস্থায় একই কক্ষে এখনও আটকা রয়েছেন বলে জানিয়েছে উদ্ধারকারীরা। ঘটনাটি তুরস্কের কাহরামানমারাস শহরের। খবর রয়টার্সের।
ধ্বংসস্তূপে আটকে থাকা ব্যক্তিরা হলেন–দাদি, তাঁর ছেলের বৌ ও নাতনি। বলা চলে, এক পরিবারের তিন প্রজন্মই এক কক্ষে আটকা।
কাহরামানমারাস শহরের এই উদ্ধারকাজকে নাটকীয় বলছে রয়টার্স। উদ্ধারকারীরা জানান, ধসে পড়া তিন তলা ভবনের একটি কক্ষে দাদি, মা ও মেয়ে আটকে রয়েছে। তারা উদ্ধারকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়েছে। তাদের উদ্ধারে একটি সুড়ঙ্গ খুঁড়েছিল উদ্ধারকারীরা। তবে, দুর্ভাগ্যবশত ধ্বংসস্তূপে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। পরে তাদের উদ্ধারের জন্য আরও একটি সুড়ঙ্গ খোঁড়া হয়। চলছে উদ্ধার অভিযান।
বিষয়টি নিয়ে তুরস্কের স্বেচ্ছাসেবী স্বাস্থ্যসেবা দলের প্রধান বুরকু বালদাউফ বলেন, ‘আমরা কক্ষে আটকে থাকাদের পেতে যাচ্ছি। এটি অলৌকিক। পানি, খাবার ছাড়াই সাতদিন পরও তারা সুস্থ রয়েছেন।’
গত ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্কের দুই দফার ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। সাত দশমিক আট ও সাত দশমিক পাঁচ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠে দেশটি। দেশটিতে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার করা হচ্ছে ধ্বংসস্তূপে আটকা জীবিতদের। আজও বেশ কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করেছে উদ্ধারকারীরা। তুরস্কের এই প্রাকৃতিক দুর্যোগকে দেশটির ইতিহাসের শতাব্দীর ভয়াবহ ভূমিকম্প বলে অভিহিত করা হচ্ছে।
আজও বেশ কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিতদের উদ্ধারের আশা ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে। তুরস্ক ও সিরিয়া মিলে নিহতের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে।
এদিকে, তুরস্কে এ পর্যন্ত আট হাজারের বেশি মানুষকে ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। তবে, শ্লথ গতির উদ্ধারকাজের জন্য এরদোয়ান প্রশাসনের সমালোচনা হচ্ছে।