পাল্টাপাল্টি হামলায় ৭০৪ ফিলিস্তিনি, ৮০০ ইসরায়েলি নিহত
গাজা উপত্যকায় টানা তৃতীয় দিনের মতো গতকাল সোমবারও (৯ অক্টোবর) পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে হামাস ও ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। পাল্টাপাল্টি হামলায় এ পর্যন্ত ফিলিস্তিনের (গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীর) ৭০৪ জন এবং ইসরায়েলের ৮০০ নিহত হয়েছে। খবর আলজাজিরা।
ইতোমধ্যে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় খাদ্য ও পানি সরবরাহ নিষিদ্ধসহ পুরো মাত্রার অবরোধ ঘোষণা করেছে ইসরায়েল। গত শনিবার (৭ অক্টোবর) কয়েক দশকের মধ্যে ইসরায়েলে সবচেয়ে বড় হামলা চালায় হামাস। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, গাজার সীমান্তে প্রায় এক লাখ রিজার্ভ সৈন্য জড়ো করা হয়েছে।
স্থানীয় সময় সোমবার (৯ অক্টোবর) দিনগত রাত ১১টা পর্যন্ত হতাহতের সর্বশেষ পরিসংখ্যান হলো ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ৬৮৭ জন নিহত এবং তিন হাজার ৮০০ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া দখলকৃত পশ্চিম তীরে কমপক্ষে ১৭ জন নিহত এবং কমপক্ষে ৯০ জন আহত হয়েছেন। অপরদিকে পাল্টা হামলায় ইসরায়েলের ৮০০ জনের বেশি নিহত এবং দুই হাজার ২৪৩ জন আহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও ইসরায়েলি মেডিকেল সার্ভিসেস এ পরিসংখ্যান জানিয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলি অবরোধের ১৬ বছর
বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা গাজার জনসংখ্যা প্রায় ২৩ লাখ। ভূমধ্যসাগরের উপকূলে ইসরায়েল ও মিসরের মাঝের এই উপত্যকার আয়তন প্রায় ৩৬৫ বর্গকিলোমিটার। ২০০৭ সাল থেকে ইসরায়েল গাজার আকাশসীমা এবং আঞ্চলিক জলসীমার ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে। এছাড়া গাজার ভেতরে ও বাইরে পণ্য সরবরাহ ও মানুষের চলাচল সীমিত করেছে ইসরায়েল।
হামাসের হামলা শুরু হওয়ার পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজাকে একটি ‘মরু দ্বীপে’ পরিণত করার হুমকি দিয়েছেন এবং এখানকার বাসিন্দাদের ‘এখনই চলে যেতে’ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
গত শনিবার সকালে সাড়ে ৬টার দিকে হামাস ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে মুহুর্মুহু রকেট হামলা চালায়। হামাসের দাবি, তারা প্রাথমিকভাবে পাঁচ হাজার রকেট ছুড়েছে। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী অবশ্য জানিয়েছে, দুই হাজার ৫০০ রকেট ছোড়া হয়েছে।
রকেট হামলার প্রায় এক ঘণ্টা পরে হামাসের যোদ্ধারা স্থল, আকাশ ও সমুদ্র পথে এক অভূতপূর্ব বহুমুখী অভিযান চালিয়ে ইসরায়েলে প্রবেশ করেন। সম্প্রতি ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে হামলা চালানোর পরই আক্রমণ শুরু করে হামাস। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইসরায়েলের হাতে রেকর্ড সংখ্যক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
এদিকে, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র বলেন, গাজায় বিমান বাহিনী হামলা শুরু করেছে। অন্যদিকে, ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় বেশ কয়েকটি এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনী ও ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া গভীর রাত পর্যন্ত ইসরায়েলি বিমান হামলা হয়েছে।