সুস্থভাবে ঈদ পালনে পাঁচ পরামর্শ
সারা মাস রোজার পর আসে ঈদ। এই ঈদকে ঘিরে কত আনন্দভাবনা, কত প্রস্তুতি আমাদের সবার। কিন্তু ঈদে শারীরিকভাবে সুস্থ না থাকলে সব আনন্দই মাটি হয়ে যায়। সুস্থভাবে ঈদ পালনে রইল কিছু পরামর্শ :
১. প্রথমেই আসা যাক খাবারের ব্যাপারে। সংযমের মাস রমজানের পর আসে ঈদ। ঈদের দিনে আমরা বিভিন্ন রকম খাবার খাই। অনেক সময় আমরা খেয়াল করি না কোন খাবারের পর কোন খাবার খাচ্ছি। অর্থাৎ বিভিন্ন রকম খাবার একই সময়ে খাই। আবার শুধু নিজের বাসা নয়, আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের বাসায়। বেড়াতে গিয়েও খাই। অনেক সময় এ রকম অনিয়ন্ত্রিত খাবার খাওয়ার কারণে বদ হজম বা পেটের সমস্যা হতে পারে। এ ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকা প্রয়োজন। ঈদের আনন্দে সব খাবারই আপনার খেতে ইচ্ছে হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু পরিমাণে কম খাবেন। আর তেল-চর্বিযুক্ত খাবারের ব্যাপারে সাবধান। ঈদের পর পর বেশ কয়েক দিন আমরা দাওয়াতে যাই, সেখানেও প্রচুর খাওয়া হয়। খেয়াল রাখতে হবে, তেল-মসলাপূর্ণ খাবার গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গেই দুধ জাতীয় খাবার, মিষ্টি ইত্যাদি এড়িয়ে চলুন।
আরেকটা কথা, প্রচুর তেল, চর্বি মসলার সমন্বয়ে যেসব খাবার তৈরি হয় সেসব ছাড়াও কিন্তু আমরা হালকা ধরনের স্বাস্থ্য সম্মত অনেক খাবার ঈদের ম্যানুতে রাখতে পারেন। যেমন : বিভিন্ন রকম ফলের তৈরি ফ্রুট সালাদ, কাস্টার্ড, হাড় ছাড়া মুরগির মাংসের রেসিপি, নানারকম সবজি ইত্যাদি। প্রচলিত রান্নার পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাবার আমাদের ঈদের ম্যানুতে থাকলে ভালো হয়।
২. আমাদের পরিবারের অনেক সদস্য উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের অসুস্থ, ডায়াবেটিস, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি, এমন অনেক রোগে ভুগছেন। সুতরাং তাদের কথা মাথায় রেখে আমাদের ঈদের খাবারের ম্যানু করলে ভালো হয়। এটা শুনতে হয়তো ভালো লাগছে না। তবে আমাদের প্রিয়জন যদি খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে, তাহলেও ভালো লাগবে না। গৃহিণীরা যদি সতর্কতার সঙ্গে চেষ্টা করেন তাহলে অবশ্যই কম তেল- চর্বি-মসলাতেও মজার রান্না করতে পারবেন।
৩. এবার আসা যাক পোশাক প্রসঙ্গে। বড়দের ব্যাপারে হয়তো বা কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু শিশুদের পোশাকের ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। ঈদের আনন্দে ফ্যাশন সচেতন বাবা- মা অনেক সময় ছোট শিশুদের এমন পোশাক পরান যা কি না আরামদায়ক নয়। বরং শিশুর জন্য অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। বেশি টাইট বা গরম জামা পরলে ত্বকে প্রদাহ বা র্যাশ হতে পারে। আবার পোশাক পরে যদি শিশু ঘামে তাহলেও ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে। তাই অবশ্যই শিশুর জন্য আরামদায়ক পোশাক নির্বাচন করবেন।
৪. ঈদের সাজে নতুন কোনো প্রসাধনী ব্যবহারে নারীদের সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি। নতুন কিছু ব্যবহার করলে হঠাৎ করে ত্বকে সমস্যা দেখা দিতে পারে। নতুন প্রসাধনী মুখে ব্যবহারের আগে পরীক্ষা করুন। হাতে বা কপালে আগে লাগিয়ে দেখুন কোনো সমস্যা হয় কি না। সমস্যা না হলে ব্যবহার করুন। দামি বা বিদেশি প্রসাধনী হলেই সেটি আপনার জন্য ভালো হবে, এমন কোনো কথা নেই। যেটা আপনার ত্বকের জন্য ভালো এমন প্রসাধন সামগ্রী ব্যবহার করবেন।
৫. আজকাল অনেক রকম ধাতুর গহনা এসেছে। যেকোনো গহনা ব্যবহারের পর ত্বকে প্রদাহ, চুলকানি বা অন্য কোনো সমস্যা হলেই সেই গহনা খুলে রাখবেন।
লেখক : অধ্যাপক, ফার্মাকোলজি ও থেরাপিউটিকস বিভাগ, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ।