কোমরব্যথা কমাতে শক্ত বিছানায় শোয়া কি ঠিক?
অনেকেই ভাবেন, শক্ত বিছানায় ঘুমালে কোমরব্যথা কমে। আসলেই কি তাই, এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৫৩৪তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. মহিব্বুর রহমান রাফে। বর্তমানে তিনি ঢাকার সরকারি হাসপাতালে ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগে পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : কোমরব্যথায় কী কী চিকিৎসা আপনারা দেন?
উত্তর : কোমরব্যথার ক্ষেত্রে বলব, যার শুধু পেশিতে স্পাজম রয়েছে, তার ক্ষেত্রে ব্যথানাশক ওষুধের সাহায্য নিতে পারি। অনেকে বলেন, সম্পূর্ণ বিশ্রামে কি চলে যেতে হবে? কারণ, কোমরব্যথার ক্ষেত্রে এখনকার যেই গবেষণাগুলো হচ্ছে, আমরা রোগীকে লম্বা সময় ধরে বিশ্রাম নিতে বলব না।
আমি কিছু তথ্য দিতে চাই যেগুলো রোগীদের কাজে লাগবে।
প্রথমে হলো, দীর্ঘ সময় বিশ্রামের বিষয়। আসলে আপনি সক্রিয় থাকবেন। আরেকটি বিষয় হলো, শক্ত বিছানায় ঘুমানোর কথা বলা হয়। আসলে আমাদের মেরুদণ্ড কিন্তু কোনো সরল রেখা নয়। এটি একটি বাঁকানো গঠন। কিছু কিছু রোগী পাই, যারা একেবারে বিছানার মধ্যে হার্ডবোর্ড দিয়ে শুয়ে থাকেন। দীর্ঘদিন ধরে শুয়ে আছেন। মনে করছেন যে এর ওপর শুয়ে থাকলে কোমরব্যথা ভালো হয়ে যাবে। যখন একটি শক্ত গঠনের ওপর আমি আমার একটি বাঁকানো গঠনকে ধরে রাখব, সে সরলরেখা হতে চাইবে। কিন্তু এটা আমার কোমরব্যথাকে না কমিয়ে উল্টো বাড়িয়ে দেবে। তো পরামর্শটা হবে, আপনি সমান বিছানায়, তোশক রয়েছে এমন বিছানায় শোবেন। বেশি নরম বা বেশি শক্ত বিছানা কিন্তু কোমরব্যথার জন্য ক্ষতিকর।
আরেকটি বিষয় হলো, লাম্বার করসেট। কিছু হলেই কোমরে একটি বেল্ট পরতে হয়। বেল্ট কেন? এটি আমাদের মেরুদণ্ডকে সাহায্য করছে। একিউট ডিস্ক প্রোলাপস যদি হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে একটি গঠন যেটি ওই মুহূর্তে আঘাতপ্রাপ্ত, এটি ঠিক করার জন্য আমাকে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত হাড়কে সহযোগিতা করতে হবে। সেক্ষেত্রে আমরা রোগীকে বলব, আপনি নিয়মিত যদি লাম্বার করসেট পরে থাকেন, তাহলে এই যে পেশিগুলো আপনাকে সাহায্য করছে, তারা কিন্তু সেটি নির্ভর হয়ে যাবে। তো আমরা ওদের নির্ভর করতে চাই না, ওদের সক্রিয় রাখতে চাই। মাঝেমধ্যে সহযোগিতা করতে চাই। সেই ক্ষেত্রে আপনি ভ্রমণে বা যখন আপনি ভারী কাজ করেন, মনে করছেন যে এখানে পরা দরকার, সেখানে আপনি পরবেন। লাম্বার করসেট সব কোমরব্যথার সমাধান নয়।
আরেকটি হলো, ব্যথার ওষুধ কি সবকিছুর সমাধান। ব্যথার ওষুধ সবকিছুর সমাধান নয়। ব্যথা কমানোর জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ওষুধ দেওয়া যেতে পারে। অনেকে শুরুতেই বলেন, ব্যথার ওষুধ কোনোভাবেই খাব না। পাঁচ/সাত দিন খেলে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে। অন্যান্য সমস্যা রয়েছে। ব্যথার ওষুধ খাওয়ার ক্ষেত্রে কার্ডিয়াক সমস্যা রয়েছে। কিন্তু যার যতটুকু লাগবে, ততটুকু আমরা দেব। যেমন, বাত জনিত কারণে যদি ব্যথা হয়, এনকাইলোজিং স্পনডোলাইটিস থাকে, তিনি তো ক্রনিক কোমরব্যথার রোগী। লম্বা সময় ধরে তাকে ব্যথার ওষুধের সহযোগিতা নিতে হবে। তবে ফিজিশিয়ানের পরামর্শ নেবেন।