আনারস খান, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ান
এমনিতেই করোনার আবহ, তার ওপর বর্ষাকাল। দুইয়ে মিলে মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। কারণ, করোনা আতঙ্কের মধ্যে বর্ষা ঋতুর ফলে দেখা দিচ্ছে নানাবিধ রোগের সংক্রমণ। সাধারণ জ্বর, ইনফ্লুয়েঞ্জা, টাইফয়েড, ডেঙ্গু ইত্যাদির পাশাপাশি দেখা দিচ্ছে পেটের রোগ। তাই এ সময় সুস্থ থাকতে নজর দিতে হবে নিজের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর দিকে।
স্বাস্থ্য ও জীবনধারাবিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অনেকেই সুষম খাবার গ্রহণ ও শরীরচর্চার মাধ্যমে নিজেদের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছেন। খাবারের মধ্যে হয়তো নিয়মিত রাখছেন বিভিন্ন ধরনের ফলও। করোনার এ সময়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে খেতে পারেন আনারস। ফ্ল্যাভোনয়েড থাকায় আনারস পুষ্টিগুণে ভরপুর।
পুষ্টিবিদদের মতে, সহজলভ্য এই আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে রোগ প্রতিরোধী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীর ফিট ও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়া ফাইবার, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ফোলেট, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ইত্যাদিতে ভরপুর এই ফল। জেনে নিন আনারসের অন্যান্য স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে।
রোজ কতটা খাওয়া যেতে পারে?
একজন সুস্থ-স্বাভাবিক ব্যক্তি প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ টুকরো আনারস খেতে পারেন। কখনো একটা পুরো আনারস একা খাবেন না। এই ফল খাওয়ার ক্ষেত্রে কখনো রস বের করে খাবেন না। কারণ, রস বের করে খেলে ফাইবারের পরিমাণ অনেকটাই কমে যায়। তাই টুকরো করে খান।
অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে
আনারস কেবল পুষ্টিতে সমৃদ্ধ নয়, এতে রয়েছে স্বাস্থ্যকর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সহায়তা করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে
আনারস বহু শতাব্দী ধরে ওষুধের একটি অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এতে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ ও এনজাইম, যা সম্মিলিতভাবে অনাক্রম্যতা বাড়িয়ে তুলতে এবং প্রদাহ দমন করতে সাহায্য করে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা নিয়মমাফিক আনারস খান, তাঁদের ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমণের ঝুঁকি অনেকটাই কম।
ওজন নিয়ন্ত্রণে
আনারসে থাকে প্রচুর ফাইবার এবং ফ্যাটের পরিমাণ অনেকটাই কম, যা শরীরের ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। তাই এই লো-ক্যালরিযুক্ত ফল রোজ আপনার ডায়েটে রাখুন।
হাড় গঠনে
আনারসে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজ। এ দুই উপাদান হাড়কে শক্ত করতে এবং হাড়ের গঠনে সাহায্য করে। পাশাপাশি দাঁতের সুরক্ষায়ও কার্যকর ভূমিকা পালন করে আনারস।
হজম ক্ষমতা বাড়ায়
আনারসে রয়েছে অনেকগুলো ডাইজেসটিভ এনজাইম, যা ব্রোমেলেইন নামে পরিচিত। এই ব্রোমেলেইন বদহজম বা হজমজনিত যেকোনো সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে। এতে থাকে প্রচুর পানি ও আঁশ, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
চোখের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, আনারসে থাকে বিটা ক্যারোটিন, যা চোখের রেটিনা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। চোখের ম্যাকুলার ডিজেনারেশন রোগ হওয়া থেকে চোখকে রক্ষা করে। এই ম্যাকুলার ডিজেনারেশন চোখের রেটিনাকে নষ্ট করে অন্ধত্বের দিকে ঠেলে দেয়। রোজ আনারস খেলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা ৭০ শতাংশ বেড়ে যায়।
এ ছাড়া ব্রণ ও ত্বকের যেকোনো সমস্যা দূর করতে, তারুণ্য ধরে রাখতে এবং আর্থ্রাইটিসের লক্ষণগুলো দূর করতে খুবই সহায়ক আনারস। এখন আনারসের মৌসুম। তো, আর অপেক্ষা কেন?