পাইলসের অপারেশন কখন করাবেন?
অনেকে মনে করেন, পাইলস (অর্শ) হলেই অস্ত্রোপচার করতে হবে। সেই ভয়ে অনেকে অপচিকিৎসকের কাছে চলে যান। পাইলসের অপারেশন কখন জরুরি হয়ে পড়ে, সে বিষয়ে আজ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ জানব।
এনটিভির নিয়মিত এক স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলেছেন ডা. আফরিন সুলতানা। তিনি বলেন, এ ধরনের রোগীদের কিছু প্রশ্ন কমন থাকে। যেমন—এ রোগ অপারেশন ছাড়া ঠিক করা যাবে কি না, সার্জারির পরে সেটি আবার হবে কি না। প্রথম প্রশ্নের উত্তরে বলব, সাধারণ ফার্স্ট ডিগ্রি পাইলস যখন থাকে, তখন সাধারণত সার্জারির জন্য অ্যাডভাইজ দেওয়া হয় না। তখন আমরা ওষুধপত্র দিই এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হচ্ছে, কোষ্ঠকাঠিন্যের সঙ্গে পাইলসের গূঢ় সম্পর্ক রয়েছে। ফিশারের জন্যও কোষ্ঠকাঠিন্য দায়ী এবং এর জন্য পাইলস বাড়তে থাকে। ইনিশিয়ালি যখন আমাদের কাছে রোগী আসে, চিকিৎসার দুটি ধাপ রয়েছে। এক, তার লাইফস্টাইলটাকে মোডিফিকেশন করা; কোষ্ঠকাঠিন্য যাতে না হয়, সে জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করা, শাকসবজি খাওয়া, দরকার হলে ইসপগুলের ভুসি খাওয়া... এভাবে মলটাকে ঠিক রাখা। এরপর যখন সেকেন্ড ডিগ্রিতে আসে, সে ক্ষেত্রেও আমরা ওষুধপত্র ও পরামর্শ দিই। এর পরেও যদি ইমপ্রুভ না করে, তখন কাটাছেঁড়া ছাড়াও কিন্তু এ রোগের ট্রিটমেন্ট দেওয়া যায়। আমরা একটা প্রসিডিউর করি, যেটাকে বলা হয় ব্যান্ডিং। একটি রাবার ব্যান্ডের মতো জিনিস, যেটা রক্তনালির টিউমারের মুখে পরিয়ে দেওয়া হয়। তখন অটোমেটিক্যালি শুকিয়ে ঝরে যায়। এ ক্ষেত্রে কোনো কাটাছেঁড়া করতে হয় না। আগের চেয়েও যদি বেড়ে যায়, থার্ড বা ফোর ডিগ্রির দিকে চলে আসে, তখন আমাদের সার্জারির দিকে যেতে হয়।
সার্জারির পরেও কি আবার পাইলস হতে পারে? সঞ্চালকের এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. আফরিন সুলতানা বলেন, এখন মলদ্বারের কাছে খুব বেশি কাটাছেঁড়া করতে হয় না। মেশিনের মাধ্যমে সার্জারিটা করে দিই। হাতে কোনো কাটাছেঁড়া করা লাগে না। আগে যখন এ সার্জারি করা হতো, তখন অনেক সময় মাসখানেকও হাসপাতালে থেকে যেতে হতো বা অনেক লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নিতে হতো। এখন এক থেকে দুদিনের মধ্যে রোগীরা বাসায় যেতে পারে। আগে যখন কাটাছেঁড়া করা হতো, তখন খুব ব্যথা হতো, রস ঝরত, বিভিন্ন ধরনের অসুবিধা হতো; এখন মেশিনের সাহায্যে অপারেশনের ফলে এই অসুবিধাগুলো কিছুই হয় না। অপচিকিৎসকের কাছে না গিয়ে যদি বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে চিকিৎসা নেওয়া হয়, তবে সারা জীবনের জন্যই ইনশা আল্লাহ ভালো থাকতে পারবে।