হাসির যত সুফল
প্রাণখুলে হাসতে পারা অনেক সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে শক্তি জোগায়। হাসি মানুষের উদ্বেগ ও মানসিক চাপ দূর করতে সাহায্য করে। গবেষকরা বলেন, প্রতিদিন মাত্র ১৫ মিনিট হাসলে হার্ট ভালো থাকে। এটি কখনো কখনো ওষুধের মতো কাজ করে। এ ছাড়া হাসির রয়েছে আরো অনেক গুণ। ওয়ান্ডারলিস্ট জানিয়েছে হাসির নয়টি সুফলের কথা।
১. আয়ু বাড়ায়
আর্কাইভ অব জেনারেল ফিজিশিয়ারির একটি গবেষণায় দেখা যায়, যেসব প্রবীণ ব্যক্তি আশাবাদী হন এবং প্রাণ খুলে হাসতে জানেন তাঁরা দীর্ঘায়ু হন। গবেষণাটিতে অংশ নেয় ৬৫ থেকে ৮৫ বছরের প্রবীণরাও। গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, যারা নিয়মিত হাসে এবং আশাবাদী হয়, তারা হতাশাগ্রস্ত মানুষের তুলনায় ৫৫ ভাগ বেশি দীর্ঘায়ু হয়।
২. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ে
হাসির অসাধারণ জাদু, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। গবেষণায় বলা হয়, এটি বিভিন্ন ধরনের ফ্লু থেকে শরীরকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে; কফ এবং ঠান্ডা প্রতিরোধে সাহায্য করে। এ ছাড়া যেসব হরমোন মানসিক চাপ বাড়ায়, উদ্বেগ তৈরি করে সেগুলোকেও নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে চমৎকার একটি হাসি।
৩. ব্যথা সারায়
ইংল্যান্ডে পরিচালিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, কেবল মাত্র ১৫ মিনিটের হাসি ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা ১০ গুণ বাড়িয়ে দেয়। এটি মস্তিষ্কের ভালো অনুভূতি তৈরীকারী হরমোনের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। এতে সাময়িকভাবে ব্যথা দূর হয়।
৪. বিষণ্ণতা দূর করে
বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়, যেসব ব্যক্তিরা বিষণ্ণতা বা ডিপ্রেশনে ভোগেন তাদের জন্য হাসি খুব উপকারী ওষুধ। হাসি মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা দূর করে; উদ্বেগ ও বিরক্তি ভাব দূর করে। তাই মন খারাপ হয়েছে তো কি, হাসতে যেন ভুলবেন না।
৫. সম্পর্ক ভালো করে
হাসি যেকোনো সম্পর্ককে ভালো করতে সাহায্য করে। হোক সেটা ব্যক্তিগত সম্পর্ক বা সামাজিক সম্পর্ক। তাই সম্পর্ক ভালো করতে রসবোধ জাগ্রত করুন এবং হাসুন।
৬. ব্যায়াম হয়
হাসলে দেহের ব্যায়াম হয়। এতে পেট, ঘাড় এসবের পেশির ব্যায়াম হয়। গবেষণায় বলা হয়, ১০০ বার হাসলে ১৫ মিনিট বাইক চালানোর মতো কাজে দেয়।
৭. শ্বাস-প্রশ্বাস ভালো করে
বেশি বেশি হাসুন। কারণ হাসি ফুসফুসে বেশি বাতাস প্রবেশ করতে সাহায্য করে। এটি গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামের মতোই কার্যকরী। গবেষকরা বলেন, যাদের শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা, বিশেষ করে অ্যাজমা রয়েছে তাদের জন্য হাসি থেরাপি খুবই উপকারী।
৮. ওজন কমায়
হাসি ভালো ব্যায়াম আগেই বলেছি। আপনি হয়তো প্রাথমিক পর্যায়ে এর বিষয়টি বুঝতে পারবেন না। তবে যদি অনেক হাসেন এটি হৃদস্পন্দনের কার্যক্রম ভালো রাখতে সাহায্য করবে এবং বিপাক ক্রিয়াকে ভালো রাখবে। তাই গবেষকদের পরামর্শ, ওজন ঠিক রাখতে খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অন্তত ২০ মিনিট হাসুন।
৯. হার্টের সুরক্ষায়
যেসব মানুষ বেশি হাসে তাদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। হার্টের পেশি শক্তিশালী হয় এবং এর কার্যক্রম ভালো হয়। তাই হার্ট ভালো রাখতে নিয়মিত হাসুন। গবেষকরা বলেন, প্রতিদিন ১৫ মিনিটের হাসি ৩০ মিনিট ব্যায়ামের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রাণখুলে হাসুন এবং বাঁচুন।