পাকিস্তানের লড়াই ছাপিয়ে নিউজিল্যান্ডের রোমাঞ্চকর জয়
মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের পঞ্চম দিনটা বেশ চ্যালেঞ্জ ছিল পাকিস্তানের জন্য। হার এড়াতে হলে টিকে থাকতে হতো পুরো দিন। ঠিক সেভাবেই লড়াই করে যাচ্ছিলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও অভিজ্ঞ ফাওয়াদ আলম।
ওই জুটির পর শেষ উইকেটে প্রাণপণ চেষ্টা করেন দুই টেইলএন্ডার নাসিম শাহ ও শাহিন শাহ আফ্রিদি। কিন্তু লড়াই জমিয়েও শেষ পর্যন্ত পারলেন না শেষ করতে। দিনের ৪.৩ ওভার বাকি থাকতে পাকিস্তানের লড়াই থামিয়ে রোমাঞ্চকর জয় তুলে নেয়ে নিউজিল্যান্ড।
টেস্টের শেষ দিনে পাকিস্তানকে ১০১ রানে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। এই জয়ের মাধ্যমে দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল নিউজিল্যান্ড। সেঞ্চুরি করে ম্যাচসেরা হয়েছে অধিনায়ক কেইন উইলিয়ামসন।
আজ বুধবার ৩ উইকেটে ৭১ রান নিয়ে পঞ্চম দিনের খেলা শুরু করে পাকিস্তান। জয়ের জন্য ৩০২ রান করতে হতো পাকিস্তানকে। হার এড়াতেও টিকে থাকতে হতো পুরোদিন। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ডের জয়ের জন্য দরকার ছিল সাত উইকেট।
কিন্তু রিজওয়ান ও অভিজ্ঞ ফাওয়াদ আলমের ব্যাটে একটা সময় মনে হয়েছিল ড্র করেই ফেলবে পাকিস্তান। দৃঢ়তা দেখিয়ে সেঞ্চুরি তুলে নেন ফাওয়াদ। দীর্ঘ ১১ বছর পর দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি পেলেন তিনি। সেঞ্চুরির পর অবশ্য বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারেননি ফাওয়াদ। ২৬৯ বলে ১০২ রান করে সাজঘরে ফেরেন। এরপর দ্রুত আরো কয়েকটি উইকেট হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান।
মনে হচ্ছিল জয়টা নাগালে নিউজিল্যান্ডের। কিন্তু শেষ উইকেটে আবারো আশা জাগিয়ে তোলেন নাসিম শাহ এবং শাহিন শাহ আফ্রিদি। দুই বোলার মিলে খেলেছেন ৪৬ বল। কিন্তু শেষ দিকে নাসিম আউট হয়ে গেলে শেষ হয়ে যায় পাকিস্তানের আশা। ২৭১ রানে থামে অতিথিদের ইনিংস।
এর আগে ম্যাচটিতে রেকর্ড গড়েন নিউজিল্যান্ড বোলার টিম সাউদি। ২৯৬ উইকেট নিয়ে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট শুরু করেছিলেন টিম সাউদি। টেস্টের চারদিনেই হয়ে যায় তাঁর নতুন রেকর্ড। নিউজিল্যান্ডের তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ৩০০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন সাউদি।
পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংসে দুই উইকেট নিয়ে ৩০০ টেস্ট উইকেট পূরণ করেন সাউদি। এর আগে এই রেকর্ড ছিল কেবল দুই কিউই বোলারের। একজন হলেন স্যার রিচার্ড হ্যাডলি (৪৩১) আরেকজন ড্যানিয়েল ভেটোরি (৩৬১)।
এর আগে বক্সিং ডে টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৪৩১ রানে থেমেছে নিউজিল্যান্ড। দলের পক্ষে সেঞ্চুরি করেছেন কেইন উইলিয়ামসন। সেঞ্চুরিসহ ১২৯ রানে থামেন তিনি। ২৯৭ বলে তাঁর ইনিংসটি সাজানো ছিল ১২টি বাউন্ডারি ও এক ছক্কায়। বিপরীতে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ২৩৯ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউজিল্যান্ড ১ম ইনিংস : ৪৩১
পাকিস্তান ১ম ইনিংস : ২৩৯
নিউজিল্যান্ড ২য় ইনিংস : ৪৫.৩ ওভারে ১৮০/৫ (ডি.) (ল্যাথাম ৫৩, ব্লান্ডেল ৬৪, উইলিয়ামসন ২১, টেইলর ১২*, নিকোলস ১১, ওয়াটলিং ৫, স্যান্টনার ৬*; আফ্রিদি ১১-০-৪৭-০, আব্বাস ১১-২-৩৩-১, নাসিম ১২.৩-১-৫৫-৩, ফাহিম ৪-১-১৮-০, ইয়াসির ৬-০-২১-০, মাসুদ ১-০-৪-০)।
পাকিস্তান ২য় ইনিংস : (লক্ষ্য ৩৭৩) ২৭১/১০ (মাসুদ ০, আবিদ ০, আজহার ৩৪*, হারিস ৯, ফাওয়াদ ১০২, রিজওয়ান ৬০, আশরাফ ১৯, ইয়াসির ০, আব্বাস ১, আফ্রিদি ৮*, নাসিম ১; সাউদি ২৩-৮-২-২, বোল্ট ২৫-৯-৭২-২, জেমিসন ২৬-১৩-৩৫-২, ওয়্যাগনার ২৮-৯-৫৫-২)।
ফল : ১০১ রানে জয়ী নিউজিল্যান্ড।