নিউজিল্যান্ড কৃষ্ণাঙ্গ ক্রিকেটারদের জন্য বিপজ্জনক!
কী কুক্ষণেই যে নিউজিল্যান্ডে খেলতে গিয়েছিলেন ফ্র্যাঙ্কলিন রোজ! দেশটিতে গিয়েই তো যত বিপত্তি আর হেনস্তার শিকার হয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই সাবেক পেসার। এমনকি যেতে হয়েছে কারাগারেও। রোজের দাবি, শুধুমাত্র কৃষ্ণাঙ্গ হওয়ার জন্য নিউজিল্যান্ডে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে তাঁকে।
ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও থেকে যাওয়ায় গত এপ্রিলে নিউজিল্যান্ড থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন রোজ। তবে তার আগে তাঁকে যেতে হয়েছিল মাউন্ট ইডেন কারাগারে। বর্তমানে স্বদেশ জ্যামাইকায় আছেন তিনি। সেখানেই নিউজিল্যান্ডের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল এনজেডটিভিকে এক সাক্ষাৎকারে রোজ বলেছেন, ‘আমি সব সময় ভাবতাম নিউজিল্যান্ড বিশ্বের অন্যতম বন্ধুত্বপূর্ণ ও নিরাপদ জায়গা। কিন্তু ওই দেশে আমার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তারপরে আর এমন কথা বলতে পারছি না।’
নিউজিল্যান্ডে রোজের অভিজ্ঞতা সত্যিই মর্মান্তিক। ২০১১ সালে অকল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলতে গিয়েছিলেন তিনি। পরের বছর অকল্যান্ডের একটি সমুদ্রসৈকতে তাঁর ওপরে কয়েকজন দুর্বৃত্ত হামলা চালিয়েছিল। কয়েকদিন পর দেশে ফেরার কথা থাকলেও হামলায় গুরুতর আহত রোজকে যেতে হয়েছিল হাসপাতালে। ফুসফুসে জমাটবদ্ধ রক্ত নিয়ে দীর্ঘদিন লড়াই করে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
তবে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েই পড়তে হয়েছিল পুলিশি জেরার সামনে। যা নিয়ে ভীষণ ক্ষুব্ধ ১৯৯৭ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ১৯টি টেস্ট ও ২৭টি ওয়ানডে খেলা রোজ, “আহত হওয়ার কারণে ওই দেশে আমাকে প্রায় চার বছর আটকে থাকতে হয়েছিল। অথচ একজন পুলিশ কর্মকর্তা আমার কাছে জানতে চেয়েছিলেন আমি কোনো অপরাধ সংগঠন বা ড্রাগ পাচারকারী দলের সঙ্গে যুক্ত কি না। প্রশ্নটা শুনে আমি ভীষণ হতাশ হয়েছিলাম। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘শুধু কৃষ্ণাঙ্গরাই কি মাদক পাচার বা অন্যান্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকে? কেন আপনি আমাকে এমন গৎবাঁধা প্রশ্ন করছেন?”
নিউজিল্যান্ডের পুলিশ অবশ্য রোজের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হতে পারেনি। তাঁকে যেতে হয়েছিল কারাগারে। দেশটির আইনরক্ষকদের এমন আচরণে তিনি ভীষণ ক্ষুব্ধ, ‘কী এমন অপরাধ করেছি যার জন্য আমাকে সাত সপ্তাহ কারাগারে থাকতে হয়েছিল? যখন বুঝতে পারলাম সিরিয়াল কিলার, ধর্ষক আর ড্রাগ পাচারকারীদের সঙ্গে আমাকে থাকতে হচ্ছে তখন ভীষণ আতঙ্কিত আর নার্ভাস হয়ে পড়েছিলাম।’
৪৪ বছর বয়সী রোজ অবশ্য এত সহজে রেহাই দিচ্ছেন না নিউজিল্যান্ডকে। ‘নির্যাতনকারী’ দেশটির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আইসিসির কাছে একটা চিঠি দিয়েছেন তিনি। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের জন্য নিউজিল্যান্ড নিরাপদ জায়গা নয়। বিশেষ করে তিনি যদি কৃষ্ণাঙ্গ হন।’