এনসিএল টি-টোয়েন্টি
খুলনাকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় শিরোপা রংপুরের

জয়ের জন্য রংপুরের দরকার তখন ২ রান। ১৭তম ওভারের শেষ বলে অরণ্য দাসকে লংঅফ দিয়ে চার মারলেন নাঈম ইসলাম। ততক্ষণে ডাগআউট থেকে দৌড় শুরু করেছেন সতীর্থরা। তাদের সঙ্গেই উদযাপনে মেতে উঠলেন নাঈম। এটি শিরোপা জয়ের উদযাপন।
লক্ষ্যটা কঠিন ছিল না, টানা দ্বিতীয় শিরোপার খোঁজে থাকা রংপুরের ব্যাটাররা সেটি ছুঁতে কোনো ভুলও করেননি। খুলনার বোলারদের আক্ষেপ বাড়িয়ে নাসির হোসেন-নাঈম ইসলামদের অভিজ্ঞতার ওপর ভর করে সহজেই শিরোপার মঞ্চে চলে যায় রংপুর। খুলনাকে ৮ উইকেটে হারিয়ে এনসিএল টি-টোয়েন্টির টানা দ্বিতীয় শিরোপা ঘরে তুলল রংপুর।
আজ রোববার (১২ অক্টোবর) প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৬ রানের পুঁজি দাড় করেছিল খুলনা। জবাব দিতে নেমে ৩ ওভার আর ৮ উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় রংপুর।
স্বল্প রান তাড়ায় নেমে শুরুটা দুর্দান্ত করলেন রংপুরের দুই ওপেনার নাসির হোসেন আর জাহিদ জাভেদ। উদ্বোধনী জুটিতেই ৬১ রান তোলেন এই দুজন। ২৪ বলে ২৭ রান করে জাহিদ ফিরলে ভাঙে সেই জুটি। তবে নাসির ফেরেন উইকেটে আরও খানিটা সময় কাটিয়ে। হাফসেঞ্চুরির আশা জাগিয়েও অবশ্য সেটি পূরণ করতে পারেননি তিনি। ৫ চার আর এক ছক্কায় ৩১ বলে ৪৬ রান করেন নাসির।
নাসির ফিরলে অধিনায়ক আকবর আলীকে নিয়ে দলের হাল ধরেন অভিজ্ঞ নাঈম ইসলাম। খুলনার বোলারদের অপেক্ষা বাড়িয়ে অপরাজিত জুটিতে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান এই দুজন। নাঈম অপরাজিত থাকেন ৩২ বলে ৪০ রানে। আর আকবর ১৫ বলে ১৯ রানে।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি খুলনার। স্কোরবোর্ডে কোনো রান যোগ করার আগেই ফিরে যান ওপেনার ইমরানুজ্জামান। নাসুম আহমেদের শিকারে পরিণত হন তিনি।
এরপর ভুল বোঝাবুঝির রানআউটে কাটা পড়েন এনামুল হক বিজয়। ফেরার আগে ১৫ বলে ১২ রান আসে তার ব্যাট থেকে। বিজয়ের সঙ্গে সেসময় উইকেটে থাকা ওপেনার সৌম্য সরকারও ফেরেন তার পরপরই। কচ্ছপগতির ব্যাটিংয়ে ২২ বলে ৮ রান করে বিদায় নেন তিনি।
চার নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামা অধিনায় মোহাম্মদ মিথুন একপ্রান্ত আগলে রেখে রানের গতি কিছুটা বাড়ান। অবশ্য তখনও চলেছে যাওয়া-আসার মিছিল। আফিফ হোসেন ধ্রুব (১০ বলে ১৪), পারভেজ জীবনরা (৯ বলে ৮) যোগ দিয়েছেন সেই মিছিলে।
ষষ্ঠ উইকেটে মৃত্যঞ্জয় চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে ৪৪ রানের জুটি গড়ে দলীয় রান ১০০ পার করেন মিথুন। ব্যাটহাতে ছোট্ট ক্যামিওকে খুব বেশি বড় করতে পারেননি মৃত্যুঞ্জয়। সমান ২ চার আর ছক্কায় ১৩ বলে ২৪ রান করে তিনি বিদায় নিলে ভাঙ্গে সেই জুটি।
এর পরপরই ফিরে যান মিথুনও। আব্দুল্লাহ আল মামুনের বলে নাসুমকে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৩২ বলে ৪৪ রান করে ফেরেন তিনি। এক চার আর ৩ ছক্কায় সাজানো ছিল তার ইনিংসটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
খুলনা বিভাগ : ২০ ওভারে ১৩৬/৮ (ইমরানুজ্জামান ০, সৌম্য ৮, বিজয় ১২, মিথুন ৪৪, আফিফ ১৪, পারভেজ জীবন ৮, মৃত্যুঞ্জয় ২৪, অভিষেক ০, জিয়াউর ৯*, নাহিদুল ১১*; নাসুম ৩-০-১৭-১, নাসির ৪-১-১৯-০, হাসিম ৪-০-২৮-১, ইকবাল ২-০-১৪-১, জাহিদ ১-০-১১-০, এনামুল ২-০-১৪-১, আলাউদ্দিন ২-০-১৭-১, আল মামুন ২-০-১৫-২)।
খুলনা : ১৭ ওভারে ১৩৮/২ (জাহিদ ২৭, নাসির ৪৬, নাঈম ৪০*, আকবর ১৯*; অভিষেক ২-০-২২-০, জিয়াউর ১-০-১০-০, মৃত্যুঞ্জয় ৩-০-২৭-০, নাহিদুল ৩-০-১৭-০, টিপু ৪-০-৩২-০, জীবন ২-০-১২-১, আফিফ ২-০-১৬-১)।
ফলাফল : রংপুর ৮ উইকেটে জয়ী।