বিশ্বকাপজয়ী রিচা পেলেন ‘বঙ্গভূষণ’, পুলিশের ডিএসপি পদ
নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতেছে ভারত। এরপর থেকেই বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটারদের নিয়ে মেতে আছে পুরো দেশ। যার যার রাজ্য থেকে জমকালো আয়োজনে অভ্যর্থনার সঙ্গে পুরস্কৃতও করা হচ্ছে তাদের। আর এই বিশ্বকাপজয়ী দলের একজন উইকেট-রক্ষক ব্যাটার রিচা ঘোষ। শিলিগুড়ির এই ক্রিকেটারকেও এবার বর্ণাঢ্য আয়োজনে সম্মানিত করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রথম বাঙালি নারী ক্রিকেটার হিসেবে এবার বিশ্বকাপ জিতেছেন রিচা। গতকাল শনিবার (৮ নভেম্বর) কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে তাকে দেওয়া হয়েছে রাজ্যের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘বঙ্গভূষণ’, পুলিশের ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট (ডিএসপি) পদ, নগদ অর্থ পুরস্কার ও একটি স্বর্ণের চেইন।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রথম নারী ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপ জিতেছেন শিলিগুড়ির এই ২২ বছর বয়সী ক্রিকেটার। তার এই সাফল্যে গর্ব প্রকাশ করেছেন ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের (সিএবি) সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি।
ইডেন গার্ডেন্সের অনুষ্ঠানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত থেকে নিজ হাতে রিচাকে পদক, ডিএসপি’র নিয়োগপত্র ও সোনার চেইন তুলে দেন।
রিচাকে সিএবি থেকেও দেওয়া হয়েছে ৩৪ লাখ টাকার পুরস্কার। বিশ্বকাপ ফাইনালে তার প্রতিটি রানের জন্য এক লাখ টাকা হিসেব এই পুরস্কার দেওয়া হয় তাকে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ফাইনালে ৭ নম্বরে নেমে ২৪ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৩৪ রান করে দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন তিনি।
আরও পড়ুন : সাক্ষাতে মোদির ‘স্কিন কেয়ার’ রুটিন জানতে চাইলেন হারলিন
রিচার প্রশংসা করে গাঙ্গুলী বলেন, ‘রিচা নিচের দিকে ব্যাট করতে নেমে যে কাজটা করে সেটা সবচেয়ে কঠিন। কারণ সেখানে কম বলে দ্রুত রান তুলতে হয়। সেখানে রিচা রান করেছে। জাতীয় দলে ওর স্ট্রাইকরেটটাই তফাত গড়ে দিয়েছে।’
গাঙ্গুলী আরও বলেন, ‘রিচা পুরো বাংলার গর্ব। একদিন যেন বলতে পারি রিচা ঘোষ ভারতের অধিনায়ক। সেই দিনটার অপেক্ষায় আছি। তোমার বয়স এখনও ২২ বছর, তার মানে অনেক সময় পাচ্ছ।’
বিশ্বকাপে ৮ ইনিংসে ৩৯.১৬ গড় ও ১৩৩.৫২ স্ট্রাইক রেটে ২৩৫ রান করেন রিচা। বিশ্বকাপে ব্যাটারদের মধ্যে তার স্ট্রাইক রেট সর্বোচ্চ। ডিয়ান্দ্রা ডটিনের এক বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ১২ ছয়ের রেকর্ডেও ভাগ বসিয়েছেন তিনি।
অনুষ্ঠানে রিচার বাবা-মা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের আরেক ক্রিকেটার ঝুলন গোস্বামী, যিনি ২০১৭ সালে ভারতের হয়ে বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলেন। তবে সেবার রানার্সআপ হয় ভারত। এছাড়া রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, অভিনেত্রী-সাংসদ মিমি চক্রবর্তীও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন : বিশ্বকাপ জিতে বড় অঙ্কের পুরস্কারও পাচ্ছেন জেমিমাহ–মান্ধানারা
অনুষ্ঠানে রিচাকে নিয়ে ঝুলন বলেন, ‘২০১৩ সালে আমরা কিছুটা কঠিন সময় পার করছিলাম, তাই আমি জেলা পর্যায়ে ট্রায়াল নেওয়ার কথা জানিয়েছিলাম। অনূর্ধ্ব-১৫ ট্রায়ালে রিচাকে প্রথম দেখি। রিচা প্রতিভাবান ছিল। আমি কর্মকর্তাদের বলি তাকে সহায়তা করতে। ওকে সিনিয়র দলে খেলাতে চাই। আর তারপর তোর হাত দিয়ে আমাদের বিশ্বকাপটা আসলো- অনেক অনেক ধন্যবাদ।’

স্পোর্টস ডেস্ক