টানা তিন জয়ে গ্রুপসেরা হয়ে সেমিতে বাংলাদেশ
ব্যাটিংয়ে নেমে দুর্দান্ত শুরুর পর পথ হারাল বাংলাদেশ। এতে বড় রানের আশা জাগিয়ে থামতে হলো আড়াইশর আগেই। এরপর অবশ্য ব্যাটারদের সেই দুর্বলতাকে ঢেকে দিলেন বোলাররা। দুর্দান্ত বোলিংয়ে কাঁপন ধরালেন শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং লাইনে। সেই পারফরম্যান্সে টানা তৃতীয় জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ।
আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৪৬.৩ ওভারে সবগুলো উইকেট হারিয়ে ২২৫ রানের পুঁজি দাঁড় করায় বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে ৪৯.১ ওভারে ১৮৬ রান তুলতেই গুটিয়ে গেছে শ্রীলঙ্কা অনূর্ধ্ব-১৯ দল। এতে ৩৯ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
‘বি’ গ্রুপ থেকে আগেই যুব এশিয়া কাপের সেমিফাইনালে খেলা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার। এই ম্যাচ দিয়ে নির্ধারণ হল গ্রুপ সেরা হচ্ছেন কারা। তিন জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে নিজেদের সেরা প্রমাণ করেই শেষ চারে গেলো বাংলাদেশ।
রান তাড়ায় নেমে শুরুতে বাংলাদেশি বোলারদের ওপর চড়াও হয়েছিল শ্রীলঙ্কা। তবে টাইগার বোলাররা দ্রুতই নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে চেপে ধরে লঙ্কানদের। এরপর আর বাংলাদেশের সামনে দাঁড়াতে পারেনি শ্রীলঙ্কার ব্যাটাররা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে নিয়েছে শাহরিয়ার আহমেদ-ইকবাল হোসেন ইমন-সাইমন বশির রাতুলরা।
ম্যাচের সপ্তম ওভারে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন ইমন। ২১ বলে ১২ রান করা ভিরান চামুদিথাকে ফেরান উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ বানিয়ে। পরের ওভারে এসে আরেক ওপেনার দিমান্থা মাহাভিথানাকে ফেরান রাতুল। তিনি ফেরেন ৪৯ বলে ১৩ রান করে।
পরের দুই ব্যাটার কিথমা ভিথানাপাথিরানা ও কাভিজা গোমেজও সুবিধা করতে পারেননি। ভিথানাপাথিরানাকে রানের খাতা খোলার আগেই ফেরান রাতুল। কাভিজাকে ফেরান ইমন। এতে শ্রীলঙ্কা পঞ্চাশ পেরোনোর আগেই ৪ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ।
এরপর কিছুটা লড়াইয়ের আভাস দেয় শ্রীলঙ্কা। ধ্বংস্তূপের সামনে দাঁড়িয়ে লড়াইয়ে আভাস দেন অধিনায়ক ভিমাথ দিনসারা ও চামিকা হেনাতিগালা। ৩২ বলে ১৭ রান করা দিনসারাকে ফিরিয়ে সেই প্রতিরোধ ভাঙেন শাহরিয়ার আহমেদ।
৬৭ বলে ৪১ রান করা হেনাতিগালাকেও ফেরান স্পিনার শাহরিয়ার। এরপর ২৭ বলে ১৪ রান করা দুলনিথ সিজেরাকে ফিরিয়ে লঙ্কানদের কোমড় ভেঙে দেন শাহরিয়ার।
শেষদিকে আধাম হিলমি লড়াই চালালেও সেটি কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। ৪৯তম ওভারে ৩৮ বলে ৩৯ রান করে ইমনের শিকার হয়ে ফেরেন তিনি। শেষ ব্যাটার হিসেবে রাজিথ নিমাশ্রাকে ফেরান সাদ ইসলাম।
বাংলাদেশের হয়ে সমান তিনটি করে উইকেট নেন ইকবাল হোসেন ইমন ও শাহরিয়ার আহমেদ। দুটি উইকেট গেছে সাইমন বশির রাতুলের ঝুলিতে। একটি করে উইকেট পেয়েছেন আজিজুল তামিম ও সাদ ইসলাম।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে এদিনও শুরুটা দারুণ করেছিল বাংলাদেশ। জাওয়াদ আবরার আর রিফাত বেগের উদ্বোধনী জুটিতে এসেছিল ৮৪ রান। চলমান এশিয়া কাপে ধারাবাহিক জাওয়াদ এদিন ফিরেছেন ৪৯ রান করে। তিনি ফিরলেই ভাঙে উদ্বোধনী জুটি।
ইনিংস বড় করতে পারেননি রিফাতও। ৪৮ বলে ৩৬ রান করে ফিরেছেন তিনি। এরপর তৃতীয় উইকেটে পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের জুটি গড়ে বড় রানের আশা দেখাচ্ছিলেন অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম আর কালাম সিদ্দিকী এলিন।
তবে রিফাতের মতো একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করেন আজিজুল তামিম। ৪৮ বলে ২৯ রান করে বোল্ড আউট হয়ে ফেরেন তিনি। এরপর আর কেউ দায়িত্ব নিতে পারেননি সেভাবে।
দ্রুতই বিদায় নেন রিজান হোসেন (৬ বলে ৬) ও শাহরিয়ার আহমেদ (৯ বলে ৩)। একপ্রান্ত আগলে রাখা এলিনও আর বেশি সময় উইকেটে থাকতে পারেননি। তিনি ফেরেন ৬০ বলে ৩২ রান করে।
শেষ দিকে চেষ্টা করছিলেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার ফরিদ হাসান। কিন্তু ৪০ বলে ২৯ রান করে দুর্ভাগ্যজনক রানআউটে কাটা পড়েন তিনি। এতে বড় রানের আশা দেখানো বাংলাদেশ পুরো ৫০ ওভারও খেলতে পারেনি। ৪৬.৩ ওভারে গুটিয়ে যায় ২২৫ রানে।
শ্রীলঙ্কার হয়ে সর্বোচ্চ চারটি উইকেট নেন কাভিজা গোমেজ। দুটি করে উইকেট যায় রাজিথ নিমাশ্রা আর ভিরান চামুদিথার ঝুলিতে। একটি উইকেট পেয়েছেন দুলনিথ সিজেরা।

স্পোর্টস ডেস্ক