বিশ্বকাপ জিততে না পারলে জুলাইতে আমাকে ধরবেন : নেইমার
জাতীয় দলের জার্সিতে নেইমার জুনিয়রকে সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল ২০২৩ সালের অক্টোবরে। এরপর দীর্ঘ সময় কেটেছে চোট আর পুনর্বাসনে। সেই চোটের সঙ্গে লড়াই শেষ না হতেই আবারও ডাক্তারের ছুরি-কাচির নিচে যেতে হচ্ছে ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টারকে। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বেলো হরিজন্তের একটি হাসপাতালে তার বাঁ হাঁটুতে অস্ত্রোপচার করা হবে। তবে অস্ত্রোপচারের টেবিলে যাওয়ার ঠিক আগেই ২০২৬ বিশ্বকাপ নিয়ে বড় এক বাজি ধরলেন ৩৩ বছর বয়সী এই তারকা।
গত শনিবার প্রেমিকা ব্রুনা বিয়ানকার্দিকে নিয়ে এক সংগীতানুষ্ঠানে গিয়ে ভক্তদের উদ্দেশে একরকম চ্যালেঞ্জই ছুড়ে দিয়েছেন নেইমার। তিনি বলেন, ‘ব্রাজিলে বিশ্বকাপ ফিরিয়ে আনতে যা যা করা সম্ভব, আমরা তার সবই করব। এমনকি অসম্ভবকেও সম্ভব করার চেষ্টা করব। আর যদি না পারি, তবে জুলাইতে (বিশ্বকাপের পর) আপনারা এ নিয়ে আমাকে ধরবেন (কৈফিয়ত চাইবেন)।’
ব্রাজিলের বর্তমান কোচ কার্লো আনচেলত্তির দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি আরও বলেন, ‘আনচেলত্তি, আমাদের একটু সাহায্য করুন... ফাইনালে উঠতে পারলে কথা দিচ্ছি আমি গোল করবই!’
গত এক মাস ধরেই মেনিসকাসের চোটে ভুগছিলেন নেইমার। সান্তোসের হয়ে ব্যথা নিয়েই খেলেছেন, গোলও করেছেন। শৈশবের ক্লাবকে অবনমন থেকে বাঁচিয়েছেন। অবশেষে যাচ্ছেন ছুরি-কাচির নিচে। ব্রাজিল জাতীয় দল ও আতলেতিকো মিনেইরোর প্রধান চিকিৎসক রদ্রিগো লাসমার আজ তার অস্ত্রোপচার করবেন। ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবো’ জানিয়েছে, পুরোপুরি সেরে উঠতে নেইমারের সর্বোচ্চ এক মাস সময় লাগতে পারে।
তবে নেইমারের জন্য জাতীয় দলের দরজা খোলা রাখা নিয়ে কোচ আনচেলত্তির বার্তা পরিষ্কার—বিশ্বকাপ খেলতে হলে শতভাগ ফিট হতে হবে এবং থাকতে হবে নিয়মিত খেলার মধ্যে। চলতি মৌসুমে সান্তোসের হয়ে ২৮ ম্যাচে ১১ গোল ও ৪টি অ্যাসিস্ট থাকলেও নেইমারের ফিটনেস নিয়ে প্রশ্ন ছিলই। আজকের অস্ত্রোপচার সেই শঙ্কা আরও উসকে দিল।
আগামী ১১ জুন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে শুরু হবে ফুটবল বিশ্বকাপ। তার আগে মার্চে ফ্রান্স ও ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রীতি ম্যাচ খেলবে ব্রাজিল। ফেব্রুয়ারিতে সুস্থ হয়ে ফেরার পর আনচেলত্তির মন জয় করার জন্য নেইমারের হাতে সময় থাকবে মাত্র এক মাস। ২৬ মার্চ বোস্টনে ফ্রান্স এবং ৩১ মার্চ অরল্যান্ডোতে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দুটিই হতে যাচ্ছে নেইমারের জন্য প্রকৃত ‘অগ্নিপরীক্ষা’। সেখানে উতরাতে হলে তাকে শুধু ফিট হলেই চলবে না, ফিরতে হবে পুরোনো সেই জাদুকরী ছন্দে।
এখন দেখার বিষয়, চোট-আঘাতের এই লুকোচুরি খেলা শেষ করে নেইমার কি পারবেন মার্চের আগেই নিজেকে প্রস্তুত করতে? নাকি আরও একবার স্বপ্নভঙ্গ হবে তার এবং কোটি ভক্তের?

স্পোর্টস ডেস্ক