অ্যাশেজে বোলারদের দাপটে ভাঙল ১২৩ বছরের পুরোনো রেকর্ড
প্রথম তিন ম্যাচ জিতে আগেই সম্মানের অ্যাশেজ নিজেদের করে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। সেই আত্মবিশ্বাস নিয়েই বক্সিং ডে টেস্ট শুরু করেছে তারা। বিপরীতে ইংল্যান্ডের সামনে রাজ্যের চ্যালেঞ্জ। সিরিজ হারিয়ে এখন সম্মান বাঁচানোর লড়াই। দুই দলের এই অবস্থায় প্রথম দিনটা গেছে বোলারদের দখলে। এক দিনেই অলআউট হয়েছে দুই দল।
বোলারদের এমন দাপটে ভেঙেছে ৭৪ বছর আগের রেকর্ড। ৭৪ বছরে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্টের একদিনে ন্যূনতম ২০ উইকেট পড়ার ঘটনা এটাই প্রথম। সব মিলিয়ে এমন ঘটনা ঘটল সপ্তমবার এবং আজকের আগে সর্বশেষ এমন কিছু দেখা গেছে ১৯৫১ সালে অ্যাডিলেড ওভালে। সেই টেস্টে এক দিনে ২২ উইকেট পড়েছিল।
মেলবোর্নে একদিনে অবশ্য এরচেয়ে বেশি উইকেটে পড়ার রেকর্ড আছে। ১৯০২ সালে অর্থাৎ ১২৩ বছর আগে অ্যাশেজে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ম্যাচে পড়েছিল ২৫টি উইকেট। এরপর ১২৩ বছরে অ্যাশেজে এই মাঠে টেস্টের প্রথম দিনে এটাই সর্বোচ্চ উইকেট (২০) পড়ার ঘটনা।
আজ শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বক্সিং ডে টেস্টের প্রথম দিনে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৪৫.২ ওভারে ১৫২ রান করেই গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। এরপর ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ডের অবস্থা আরও করুণ। ২৯.৫ ওভারে ১১০ রান করেই গুটিয়ে গেছে ইংল্যান্ড।
এরপর ব্যাট করতে নেমে আবারও ৪ রান তুলেছে অসিরা। সবমিলিয়ে প্রথম দিন শেষে ৪৬ রানে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া। ৪ রানে অপরাজিত আছেন স্কট বোল্যান্ড। প্রথম দিনে উইকেটেই যেতে পারেননি ট্রাভিস হেড।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দেখেশুনে শুরু করেন ট্রাভিস হেড আর জ্যাক ওয়েডারেল্ড। কিন্তু সেটি বেশি দূর আগায়নি দলীয় ২৭ রানের সময় ফেরেন হেড। ২২ বলে ১২ রান করেন তিনি। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় অসিরা।
মিডল অর্ডারে উসমান খাজা, অ্যালেক্স ক্যারি, ক্যামেরুন গ্রিন আর মিচেল নেসারের কিছুটা লড়াইয়ে দেড়শ ছাড়ায় অস্ট্রেলিয়া। পঞ্চম উইকেটে প্রতিরোধের চেষ্টা করেন খাজা আর ক্যারি। ৫২ বলে ২৯ রান করা খাজাকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন গাস আটকিনসন।
এরপর ভালো শুরু করেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি বাকিরা। ৩৫ বলে ২০ রান করে ফেরেন ক্যারি। ৩৪ বলে ১৭ রান করে দূর্ভাগ্যজনক রান আউটে কাটা পড়েন ক্যামেরুন গ্রিন। নেসার ফেরেন ৪৯ বলে ৩৫ রান করে। এটাই অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান।
ইংল্যান্ডের এক জস টংয়ের সামনেই দাঁড়াতে পারেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটাররা। একাই পাঁচ উইকেট শিকার করেন তিনি। ২টি উইকেটে গেছে গাস আটকিনসনের ঝুলিতে। একটি করে উইকেট পেয়েছেন বেন স্টোকস আর ব্রাইডন কার্স।
এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে আগের মতোই ব্যর্থতার গল্প রচনা করেন ইংল্যান্ডের টপঅর্ডার ব্যাটাররা। প্রথম চার ব্যাটারের একজনও দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পারেননি।
১৬ রানে ৪ উইকেট হারানো ইংল্যান্ডের হাল ধরার চেষ্টা করেন। হ্যারি ব্রুক আর বেন স্টোকস। ৫০ রানের জুটি গড়েন তারা। ৩৮ বলে ১৬ রানে স্টোকসকে ফিরিয়ে সেই জুটি ভাঙেন নেসার।
পরের দুই ব্যাটার জেমি স্মিথ (৩ বলে ২) আর উইল জ্যাকসও (১০ বলে ৫ রান) ফেরেন দ্রুতই। হাফসেঞ্চুরির কাছে গিয়ে ফেরেন ৩৪ বলে ৪১ রান করা হ্যারি ব্রুক। এরপর শেষদিকে ৩৫ বলে ২৮ রান করে ইংল্যান্ডের রান ১০০ ছাড়ান আটকিনসন।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট নেন মিচেল নেসার। ৩টি উইকেট শিকার করেন স্কট বোল্যান্ড। ২টি উইকেট গেছে মিচেল স্টার্কের ঝুলিতে। আর একটি উইকেটে পেয়েছেন ক্যামেরুন গ্রিন।
৪২ রান এগিয়ে থেকে শেষ বিকেলে আবারও ব্যাটিংয়ে নামে অস্ট্রেলিয়া। এই ইনিংসে আর মাত্র এক ওভার খেলা হয়। নির্বিঘ্নেই সেটি কাটিয় দেন স্কট বোল্যান্ড।

স্পোর্টস ডেস্ক