এআই চশমায় নতুন যুগ : মেটার মুকুট ছিনিয়ে নেবে চীনা প্রযুক্তি!
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নির্ভর চশমার বাজারে নতুন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। চীনে এখন শুধু চোখের ইশারা আর ভয়েস কমান্ডেই দোকানে টাকা দেওয়া যাচ্ছে। চীনা প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো দ্রুত দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার দখল করতে চাইছে।
প্রায় এক দশক ধরে স্মার্ট আইওয়্যার (চশমা) জনপ্রিয়তা পাচ্ছিল না। কিন্তু এআই প্রযুক্তির উন্নতির কারণে এই খাতে নতুন প্রাণ এসেছে। বর্তমানে আমেরিকান বহুজাতিক প্রযুক্তি কোম্পানি ‘মেটা’ এই বাজারের নেতৃত্ব দিচ্ছে। তবে আলিবাবা, শাওমি, রকিড ও এক্সরিয়ালের মতো চীনা কোম্পানিগুলো মেটাকে ছাড়িয়ে যেতে চাইছে।
রকিডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিসা ঝু বলেন, চীনের সুবিধা অনেক। কারণ, এর উৎপাদন ব্যবস্থা এবং সরবরাহ চেইন সবই নিজেদের তৈরি।
রকিডের চশমাগুলো কোনো একটি জেনারেটিভ এআই মডেলে আবদ্ধ নয়। ঝু বলেন, ‘আমরা ওপেনএআই ব্যবহার করি, ফলে লামা, জেমিনি ও গ্রকের সঙ্গেও সংযোগ করতে পারি। এ কারণেই অনেকে আমাদের চশমা পছন্দ করে।’
ঝু আরও জানান, রকিডের প্রদর্শিত অন্য একটি বৈশিষ্ট্য হলো তাৎক্ষণিক অনুবাদ করা। যখন সামনের একজন ব্যক্তি চীনা ভাষায় কথা বলে তখন চশমার ভেতরের লেন্সে ফসফোর-সবুজ ইংরেজি সাবটাইটেল ভেসে ওঠে।
চীনে মেটার পরিষেবা বন্ধ থাকায় দেশীয় সংস্থাগুলো বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে। ২০২৫ সালে চীনে স্মার্ট চশমার বিক্রি ১১৬ শতাংশ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। দৈনন্দিন জীবনে কিউআর কোডে পেমেন্টের মতো উন্নত ডিজিটাল অবকাঠামো থাকায় চীনে এই প্রযুক্তির চাহিদা বাড়ছে।
শাওমিকে এই বাজারে ‘ডার্ক হর্স’ বলা হচ্ছে। তারা বাজারে আসার মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই সেরা বিক্রিত স্মার্ট চশমার তালিকায় তৃতীয় স্থানে উঠে আসে। রকিডের মতো সংস্থাগুলোও ভালো করছে।
তবে বিশ্ববাজারে মেটার আধিপত্য ভাঙা কঠিন। ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে মেটা বিশ্বব্যাপী স্মার্ট চশমার বাজারের ৭৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করেছে। এর কারণ হলো তাদের রে-ব্যান মেটা স্মার্ট গ্লাসেস দেখতে একদম সাধারণ চশমার মতো, যা ফ্যাশনেবল।
চীনা সংস্থাগুলো চশমার ওজন কমানোর দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। তবে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তার উদ্বেগ ও উন্নত চিপ প্রযুক্তির অভাব এখনও তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এরপরেও রকিডের সিইও ঝু আত্মবিশ্বাসী। তিনি মনে করেন, ভবিষ্যতে ফোন নয়, এই এআই চশমাগুলোই ব্যবহারকারীর পছন্দের শীর্ষে থাকবে।
সূত্র : বার্তা সংস্থা এএফপি

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক