‘আফগান অধ্যায়’ শেষ করতে পশ্চিমাদের তোড়জোড়

আফগানিস্তান থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিতে জোরেশোরে কাজ করছে পশ্চিমা দেশগুলো। গতকাল বুধবার তারা স্বীকার করেছে, গত দুই দশকের যুদ্ধে যেসব আফগান নাগরিক তাদের সহযোগিতা করেছে তাদের অনেককেই হয়ত রেখেই যেতে হবে।
এসব আফগানরা আগামী সপ্তাহে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের পর তালেবানের অধীনে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, মঙ্গলবারও কাবুলে এক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে হামিদ কারজাই বিমানবন্দরে বিশাল আয়োজনে বিদেশিদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলেছে। সেখানে কিছু আফগানও অপেক্ষমান ছিল।
কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে তালেবান নিয়ন্ত্রিত এলাকায় নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বেড়ে চলায় প্রত্যাহার প্রক্রিয়া শেষ করার চাপ বেড়েছে।
বুধবার বিকেলে জারি করা এক সতর্কবার্তায় কাবুলে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস তাদের নাগরিকদের বিমানবন্দর এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে। যারা বিমানবন্দরের ফটকে অবস্থান করছে তাদের দ্রুত সেখান থেকে সরে যেতে বলা হয়েছে। তবে কেন এই সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে তা ব্যাখ্যা করা হয়নি।
ন্যাটোর ইউরোপীয় মিত্রদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই মাসের শেষেই সব সেনা আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে অটল।
এই প্রেক্ষাপটে তালেবান কাবুল দখল করার পর যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ১০ দিনে ইতিহাসের অন্যতম বিশাল প্রত্যাহার প্রক্রিয়া পরিচালনা করেছে, এই সময়ে তারা ৮৮ হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে, যাদের মধ্যে বুধবার পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ হাজার জনকে বের করে আনা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, প্রতি ৩৯ মিনিটে একটি ফ্লাইট ওঠানামা করার মতো গতিতে কাজ চলছে।
হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, বুধবার প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে আফগান প্রত্যাহার প্রক্রিয়ার বিকল্প পরিকল্পনা এবং আইএস-কাবুল শাখার হুমকি সম্পর্কে জানানো হয়েছে।
ব্রিটেনের পররাষ্ট্র দপ্তরও জানিয়েছে, আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল রয়েছে এবং সেখানে ‘সন্ত্রাসী হামলার উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে’।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেছেন, মধ্য আগস্ট থেকে কমপক্ষে সাড়ে চার হাজার মার্কিন নাগরিককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং পররাষ্ট্র দপ্তর আফগানিস্তানে থাকা প্রায় দেড় হাজার নাগরিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্লিনকেন বলেন, আফগানিস্তান ছাড়তে চাওয়াদের সহযোগিতা করার জন্য কোনো সময়সীমা নেই, আমেরিকান ও অন্যদের জন্যও। ‘যত সময়ই লাগুক’ এটা চলবে।