ইকুয়েডর ও পেরুতে শক্তিশালী ভূমিকম্প, নিহত ১৪
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডর ও পেরুতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে কমপক্ষে ১৪ জন নিহত হয়েছে। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক বাড়িঘর ও দালানকোঠা আর এ সময় আতঙ্কে ঘর ছেড়ে মানুষ রাস্তায় নেমে আসে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানায়, গতকাল শনিবার (১৮ মার্চ) ইকুয়েডরের উপকূলীয় অঞ্চল গায়াসে ৬.৭ মাত্রার এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি। ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর গায়াকুইল থেকে ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে। এই শহরটিতে প্রায় ৩০ লাখ লোক বসবাস করে। তবে ভূমিকম্পের কারণে সুনামির কোনো সতর্কতা জারি করা হয়নি।
ভূমিকম্পের আঘাতে ইকুয়েডরেই ১৩ জন মারা গেছে আর পেরুতে মারা গেছে একজন। ইকুয়েডর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ ঘটনায় আহত হয়েছে কমপক্ষে ১২৬ জন।
ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট গুইলারমো লাসো এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোনো সন্দেহ নেই আমাদের জনসাধারণের জন্য এটি একটি সতর্ক বার্তা।’ প্রেসিডেন্টর দপ্তর থেকে জানানো হয় সব মন্ত্রণালয়কে সচল করা হয়েছে আর ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি মেরামতে তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় অর্থেরও সংস্থান করা হয়েছে। দপ্তর থেকে আরও জানানো হয়, ১১ জন মারা গেছে উপকূলীয় রাজ্য এল অরোতে আর দুজন মারা গেছে আজুয়াই রাজ্যে।
অন্যদিকে, পেরুতে ভূকম্পন অনুভূত হয় ইকুয়েডরের পাশে থাকা দেশটির উত্তর সীমান্ত থেকে প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূল জুড়ে।
পেরুর প্রধানমন্ত্রী আলবার্তো ওটারোলা জানান, ভূমিকম্পে ইকুয়েডর সীমান্তে টুমবেস অঞ্চলে চার বছরের একটি শিশু মারা গেছে। বাড়ি ভেঙে মাথায় আঘাত পেয়ে মারা যায় শিশুটি।
ইকুয়েডরের জিওফিজিক্স ইনস্টিটিউট জানায়, ভূমিকম্পের প্রথম আঘাতের পর এক ঘণ্টার মধ্যে আরও দুটি অপেক্ষাকৃত দুর্বল ‘আফটার শক’ আঘাত হানে।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছে ইসলা পুনা এলাকার একজন বাসিন্দা এ পসঙ্গে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা সবাই রাস্তায় বের হয়ে আসি...খুব ভয় পেয়েছিলাম আমরা।’ তিনি জানান ভূমিকম্পের আঘাতে তার এলাকায় বেশ কয়েকটি ঘর ভেঙে পড়েছে।
ইকুয়েডরের জরুরি বিভাগ জানায়, এল ওরোতে বেশ কয়েকজন লোক ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়েছে। এছাড়া মাচালা এলাকায় একটি দোতলা ভবন ভেঙে পড়ে বেশ কয়েকজন আটকা পড়েছে।
সংস্থাটি আরও জানায়, অগ্নি নির্বাপণ কর্মীরা উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে পাশাপাশি ন্যাশনাল পুলিশ ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করছে। তবে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।
ইকুয়েডর দেশটি ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় অবস্থিত। ২০১৬ সালে দেশটির উত্তরাঞ্চলে প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলে ভূমিকম্প আঘাত হানলে ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায়।