করোনা ঠেকাতে হার্ড ইমিউনিটির কার্যকারিতা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2020/07/07/spain.jpg)
নভেল করোনাভাইরাস মহামারি ঠেকানোর অন্যতম কৌশল হিসেবে ‘হার্ড ইমিউনিটি’র ওপর জোর দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু নতুন এক স্প্যানিশ গবেষণার কারণে এখন তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেটে প্রকাশিত এক গবেষণা বলছে, জরিপে অংশ নেওয়া স্পেনের ৬০ হাজারের বেশি মানুষের মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশ মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।
বলা হয়ে থাকে, যথেষ্ট সংখ্যক মানুষ কোনো ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তখন এর সংক্রমণ ঠেকানো যাবে, আর তখনই ‘হার্ড ইমিউনিটি’ অর্জন হবে। এ জন্য যারা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়নি, তাদের রক্ষায় সংশ্লিষ্ট এলাকার ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ মানুষের আক্রান্ত হতে হবে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্পেনের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে কোভিড-১৯ অ্যান্টিবডির হার তিন শতাংশের নিচে। কিন্তু দেশটির যেসব এলাকায় সংক্রমণের হার বেশি, অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার হারও সেখানে বেশি।
গবেষণা দলের একজন সদস্য বলেন, “যদিও স্পেনে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার অনেক বেশি, কিন্তু বিস্তারের ব্যাপকতা বেশ কম, যা 'হার্ড ইমিউনিটি' তৈরির জন্য পর্যাপ্ত নয়।”
ওই সদস্য আরো বলেন, ‘এ পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা এবং রোগ শনাক্ত করে আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাদের সংস্পর্শে যারা এসেছিল, তাদের বাধ্যতামূলকভাবে আইসোলেট করার মাধ্যমেই সামনের দিনে মহামারি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’
ইউরোপে করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড় জরিপ বলে ধারণা করা হয়।
ল্যানসেট সাময়িকীর ওই গবেষণায় আরো উল্লেখ করা হয়েছে, প্রায় একই ধরনের গবেষণা চীন ও যুক্তরাষ্ট্রেও হয়েছে।
স্পেনের সর্বশেষ পরিস্থিতি
স্পেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, দেশটিতে এ পর্যন্ত আড়াই লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে এবং ২৮ হাজার ৩৮৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। কিন্তু গত তিন সপ্তাহে দেশটিতে দৈনিক মৃত্যুর হার একক সংখ্যায় নেমে এসেছে।
গত জুনের তৃতীয় সপ্তাহে স্পেনের সরকার জরুরি অবস্থা তুলে নিয়ে বেশির ভাগ ইউরোপীয় দেশের জন্য সীমান্ত খুলে দেয়।
এর পাশাপাশি ব্রিটিশ পর্যটকেরা স্পেনে এলে কোয়ারেন্টিন না করেই ভ্রমণ করতে পারবেন, এমন সুযোগ দেওয়া হয়।
তিন মাসের বেশি সময় ধরে স্পেনে ইউরোপের অন্যতম কঠোর লকডাউন জারি ছিল।
তবে স্পেনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে গালিসিয়া রাজ্যে নতুন করে মহামারি শুরু হওয়ায় কর্মকর্তারা সেখানকার ৭০ হাজার মানুষের ওপর নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন। গালিসিয়াতে নতুন করে ২৫৮ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে লুগো প্রদেশে রয়েছেন ১১৭ জন। কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, সেখানকার পানশালাগুলো থেকে নতুন করে সংক্রমণ ছড়িয়েছে।
স্পেনে এখনকার নিয়ম অনুযায়ী, পানশালা ও রেস্তোরাঁতে ৫০ শতাংশের বেশি মানুষ যেতে পারবেন না।
এ ছাড়া কাতালোনিয়ায় নতুন করে করোনার সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় গত শনিবার সেখানকার স্বায়ত্তশাসিত সরকার নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করেছে।
কাতালান প্রেসিডেন্ট কুইম তোরা বলেছেন, বার্সেলোনার পশ্চিমের এলাকা সেগ্রিয়া থেকে কেউ বের হতে পারবেন না কিংবা সেখানে নতুন করে কেউ প্রবেশও করতে পারবেন না।