কাতারে ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি, বন্দি ৮ ভারতীয় নাগরিক
গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আট ভারতীয় নাগরিক বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারের জেলে রয়েছে। সর্বশেষ কয়েকমাস ধরেই বন্দি অবস্থায় তারা। কাতারের সাবমেরিন সংক্রান্ত প্রোগ্রামের নজরদারি করছিল ওই ভারতীয়রা। ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করছিল তারা। এই অপরাধের জন্য ওই আট ভারতীয় মৃত্যুদণ্ডের মতো সাজা পেতে পারে। কাতারের স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর বরাতে আজ মঙ্গলবার (২ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল-জাজিরা।
গত আগস্টে ওই আট ভারতীয়কে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা সবাই আগে ভারতের নৌবাহিনীর হয়ে কাজ করতো।
ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য প্রিন্ট জানিয়েছে, নিজেদের নাগরিকদের মুক্ত করার চেষ্টা চালিয়েছে ভারত। তবে, দোহা কর্তৃপক্ষ বলছে, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত প্রমাণ রয়েছে তাদের কাছে। এসব প্রমাণ তাদের দিয়েছে ইসরায়েলের সাবেক এক গোয়েন্দা।
গত মার্চে শেষের দিকে কাতারের আদালতে প্রথম তোলা হয় ওই ভারতীয়দের। এই মাসে ফের তাদের আদালতে তোলা হবে বলে জানা গেছে।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে দাহরা গ্লোবাল টেকনোলজিস অ্যান্ড কনসাল্টিং ফার্মের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়েছেন। উচ্চ প্রযুক্তির ইতালিয় সাবমেরিন কেনায় কাতারকে পরামর্শ দিয়েছিল ফার্মটি। এই সাবমেরিন রাডার শনাক্ত করতে পারে না।
পাকিস্তানের সংবাদপত্র দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল গত সপ্তাহে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দাহরা গ্লোবাল টেকনোলজিস অ্যান্ড কনসাল্টিং ফার্মটি বন্ধ করে দিয়েছে কাতার কর্তৃপক্ষ। ওই ফার্মটিতে ৭৫ ভারতীয় কাজ করতো, যার মধ্যে বেশিরভাগই দেশটির নৌবাহিনীর প্রাক্তন সদস্য।
২০২০ সালে ইতালিভিত্তিক জাহাজ তৈরি ফার্ম ফিনসেনতিয়েরি স্পার সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছিল কাতার। এই ফার্মটি কাতারের সাবমেরিন তৈরিতে সহায়তা, নৌযান রক্ষণাবেক্ষণ ও নৌ ঘাঁটি নির্মাণে সহায়তা করতো। তবে, এখন পর্যন্ত এটি বাস্তবায়িত হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েল। তবে, দখলদার দেশটি মধ্যপ্রাচ্যের সামরিক প্রযুক্তির অগ্রগতির বিপক্ষে।
আল-জাজিরা বলছে, সাবমেরিনে রেসে এগিয়ে থাকতে লড়াই করছে দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তান। দুই পক্ষই তাদের প্রতিপক্ষকে রুখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে পাকিস্তানের নৌবাহিনী ইতোমধ্যে ইতালির নির্মিত মিডজেট সাবমেরিন পরিচালনা করছে। একইসঙ্গে কাতারের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের উন্নতি করছে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারত।