গৃহযুদ্ধ বন্ধে মধ্যস্থতায় ইয়েমেনে জাতিসংঘের প্রতিনিধিদল

সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোটের হামলা ও গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইয়েমেন। ক্ষণে ক্ষণে হামলার ভয়ে থাকা মানুষ এখন মরছে অনাহারে। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি প্রচণ্ড ক্ষুধার তাড়ানায় প্রতি ১০ মিনিটে পাঁচ বছরের কম বয়সী একটি শিশু মারা যাচ্ছে। এ অবস্থায় গৃহযুদ্ধ বন্ধে মধ্যস্থতা করতে ইয়েমেনে সফর করছে জাতিসংঘের একটি প্রতিনিধিদল।
শীর্ণ কঙ্কালসার শরীরে নেই মাংসের লেশমাত্র। ঠিকরে বেরিয়ে আসছে পাঁজরের হাড়। চোখের চাহনিতে সীমাহীন অপ্রাপ্তি। অনাহারে-অপুষ্টিতে ভোগা এসব শিশুই যেন তুলে ধরছে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনের দুর্বিষহ পরিস্থিতির।
চার বছর ধরে অত্যাধুনিক বোমারু বিমানের হামলায় ইয়েমেনকে ছিন্নভিন্ন করেছে সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যে তার মিত্ররা। সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে ক্ষমতা বিস্তারের লড়াইয়ে ভুক্তভোগী ইয়েমেনে শিয়া, সুন্নি ও ইহুদিদের তিক্ত জাতিগত দ্বন্দ্ব পরিস্থিতিকে করে তুলেছে অবর্ণনীয়। তার ওপর সরকার ও হুতিদের মধ্যকার গৃহযুদ্ধে তীব্র খাদ্য সংকট তৈরি হয়েছে দেশটিতে। এমন পরিস্থিতিতে মৃত্যুর মুখে লাখ লাখ মানুষ। শিশুদের অবস্থা আরো ভয়াবহ।
ইয়েমেনের জনস্বাস্থ্যবিষয়ক মন্ত্রী তাহা আল-মুতাওয়াকেল জানান, সৌদি আরবের অব্যাহত অবরোধের কারণে খাদ্যভাবে ইয়েমেনে নবজাতকদেরও মৃত্যু ঘটছে।

ইয়েমেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিশ্ববাসীর কাছে শিশুদের খেলনা ও ভিডিও গেমস চাই না। আমরা শিশুদের বাঁচানোর জন্য ইনকিউবেটর ও এ সংক্রান্ত অন্যান্য সামগ্রী চাই। আমাদের শিশুদের বাঁচার অধিকার দেওয়া হোক।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমাদের দেশের শিশুদের জন্য মায়াকান্না বন্ধ করুন। ইয়েমেনের এই করুণ পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তেমন ভালো কিছু করতে দেখিনি। এ ছাড়া সৌদি বোমা বিস্ফোরণে ভীত হয়ে প্রতিবছর পাঁচ হাজার ইয়েমেনি শিশু ট্রমায় আক্রান্ত হচ্ছে।’
এ অবস্থায় গৃহযুদ্ধ বন্ধে বিবদমান পক্ষগুলো ছাড় দেওয়ার মনোভাব দেখানোয় মধ্যস্থতা করতে গতকাল রোববার দেশটির রাজধানী সানায় পৌঁছেছে জাতিসংঘের একটি প্রতিনিধিদল। যুদ্ধ থামাতে তাদের এই প্রচেষ্টা কতটুকু সফল হয়, সেটাই দেখার অপেক্ষা।