চিরতরে বন্ধ হলো ট্রাম্পের টুইটার অ্যাকাউন্ট
যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টুইটার অ্যাকাউন্ট চিরতরে বন্ধ করে দিয়েছে টুইটার কর্তৃপক্ষ। সম্ভাব্য সহিংসতায় উসকানির আশঙ্কায় মাইক্রো ব্লগিং সাইট টুইটার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানায়। সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে এ কথা জানানো হয়েছে।
মার্কিন কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটলে গত বুধবার সংঘাত ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের ‘দেশপ্রেমিক’ আখ্যা দিয়ে টুইট করার পর ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট ১২ ঘণ্টার জন্য লক করে দেওয়া হয়। এর আগে সংঘর্ষের ঘটনার পরই ট্রাম্পের করা তিনটি টুইট নীতিমালা ভঙ্গ করার অভিযোগ এনে মুছে দেয় টুইটার কর্তৃপক্ষ। পরে ১২ ঘণ্টা পর অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হয়। তখনই অবশ্য অ্যাকাউন্ট চিরতরে বন্ধ করা হতে পারে বলে টুইটারের পক্ষ থেকে সতর্কতা দেওয়া হয়। এবার ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট চিরতরে বন্ধের সিদ্ধান্ত নিলো টুইটার কর্তৃপক্ষ।
টুইটার কোম্পানি এক টুইটে বলেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট (@realDonaldTrump) থেকে দেওয়া সাম্প্রতিক পোস্টগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করার পর অ্যাকাউন্টটি চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আবারও সহিংসতায় উসকানি দেওয়ার আশঙ্কায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে ওই টুইটে উল্লেখ করা হয়েছে। একটি ব্লগ পোস্ট প্রকাশ করে টুইটার কর্তৃপক্ষ ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার কারণ বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছে।
এদিকে টুইটারের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারণা উপদেষ্টা জেসন মিলার টুইটে সবার উদ্দেশে লিখেছেন, ‘বিরক্তিকর... যদি মনে করে থাকেন তারা (টুইটার) এরপর আপনাদের ক্ষেত্রে এমন করবে না, তাহলে আপনারা ভুল ভাবছেন।’
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটলে গত বুধবার ট্রাম্প সমর্থকেরা হামলা চালায়। পরে টুইটারে পোস্ট করা ভিডিও বক্তব্যে ওই হামলার নিন্দা এবং একইসঙ্গে সমর্থকদের প্রশংসা করেন ট্রাম্প।
কয়েক বছর ধরেই কিছু আইনপ্রণেতা ও গন্যমান্য ব্যক্তি ট্রাম্পের টুইট নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। গত বৃহস্পতিবার সাবেক ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা এক টুইটে বলেন, “সিলিকন ভ্যালির প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত ট্রাম্পের ‘ভয়ানক আচরণ’ বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং তাকে অযোগ্য ঘোষণা করা।”
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের ২০১৭ সালের এক আদেশে ট্রাম্পের সব টুইটকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
গত ৩ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়ানোর কারণে একাধিকবার ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটার ও ফেসবুক। ভুল তথ্য প্রতিরোধের অংশ হিসেবে টুইটার ও ফেসবুক তেমন প্রতিটি পোস্টের নিচে ব্যাজ লাগিয়ে দেয়। ট্রাম্পের এমন বহু পোস্টে দেখা গেছে যেখানে পোস্টের নিচে বলা হচ্ছে, ‘ওপরের পোস্টে ভুল তথ্য রয়েছে।’
অন্যদিকে, গুগল, ফেসবুকসহ অন্যান্য সব বড় প্রতিষ্ঠানই ক্যাপিটলে সহিংসতার ঘটনায় ট্রাম্প ও তাঁর সমর্থকদের ব্যাপারে কঠোর হওয়ার কথা জানিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ‘অনির্দিষ্টকালের জন্য’ ট্রাম্পের ফেসবুক পেজ বাতিল ঘোষণা করে ফেসবুক। এ ছাড়া গেমিং প্ল্যাটফর্ম টুইচ এবং ক্ষুদেবার্তা আদান প্রদানের অ্যাপ স্ন্যাপচ্যাটও ট্রাম্পের একাউন্ট বাতিল করেছে।গত বুধবার কংগ্রেসে জো বাইডেনের বিজয় সার্টিফাই করার অধিবেশন চলাকালে শত শত ট্রাম্প সমর্থক পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়ে। এ ঘটনায় এক পুলিশ সদস্যসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয় এবং ৬৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।