টুইন টাওয়ারে হামলায় বেঁচে ফিরেছিলেন জেসন স্পিন্ডলার
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে টুইন টাওয়ারে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার আজ ১৯তম বার্ষিকী। সারা বিশ্ব অবাক বিস্ময়ে সেদিন দেখেছিল যুক্তরাষ্ট্রের গর্ব টুইন টাওয়ারের ধসে পড়া; দেখেছিল মানুষের স্বাভাবিক জীবনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে। সেই ভয়ঙ্কর স্মৃতি নিয়ে বেঁচে থাকার অভিজ্ঞতাও মানুষের আছে। সেদিন প্রাণে বেঁচে যাওয়াদের একজন মার্কিন অর্থনীতিবিদ জেসন স্পিন্ডলার।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসিতে হাইজ্যাক করা প্লেন দিয়ে চালানো হয়েছিল নারকীয় হামলা। সে হামলায় প্রাণ হারিয়েছিল প্রায় তিন হাজার মানুষ। অসহায় মানুষদের আর্তনাদে সেদিন ভারি হয়ে উঠেছিল পৃথিবীর বাতাস। চারটি যাত্রীবাহী বিমান ছিনতাইয়ের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল সন্ত্রাসীদের তৎপরতা।
ভয়াল সেই হামলা থেকে রক্ষা পেয়ে জীবনের মোড়ও কিছুটা ঘুরে গিয়েছিল স্পিন্ডলারের। ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে মন দিয়েছিলেন পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে। ঘুরে বেড়াতেন তৃতীয় বিশ্বের দেশে দেশে। ছোট ছোট প্রকল্পের মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও বাজারব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করতেন।
কথায় আছে, আপনি যতই পালিয়ে বেড়ান না কেন, মৃত্যুর হাতে অবশেষে ধরা পড়তেই হবে। স্পিন্ডলারের জীবনেও তাই ঘটেছে। কে জানত ৯/১১ হামলায় বেঁচে ফেরার পর আরেকটি ভয়াবহ হামলার মুখোমুখি হতে হবে স্পিন্ডলারকে, যা কেড়ে নেবে তাঁর প্রাণ। কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির বিলাসবহুল হোটেলে ২০১৯ সালের ১৬ জানুয়ারি সন্দেহভাজন জঙ্গি হামলায় নিহত ব্যক্তিদের একজন স্পিন্ডলার। নাইরোবির ওই হোটেলে হামলায় ২১ জন নিহত হন।
হামলার পর নাইরোবি কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে স্পিন্ডলারের মৃত্যু নিয়ে কোনো ঘোষণা দেয়নি। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জেসন স্পিন্ডলারের মা সারাহ ও ভাই জোনাথন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমেও এ মৃত্যুর খবর ছাপা হয়েছিল।
জোনাথন ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘নাইরোবিতে সন্ত্রাসী হামলায় আমার ভাই জেসন স্পিন্ডলার নিহত হয়েছেন। জেসন ৯/১১–র হামলা থেকে বেঁচে ফিরেছিলেন। আমি নিশ্চিত, সৃষ্টিকর্তা অপরাধীদের শাস্তি দেবেন।’
স্পিন্ডলার যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস করেন। তিনি নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ল স্কুলেও পড়াশোনা করেন। পেরুর শান্তি বাহিনীতেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
স্পিন্ডলার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে বিনিয়োগ ব্যাংক সলোমন স্মিথ বার্নেতে কাজ করতেন। হামলায় টুইন টাওয়ার বিধ্বস্ত হওয়ার সময় স্পিন্ডলার কর্মস্থলেই ছিলেন। তাঁর কর্মস্থল ছিল ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের সাততলায়। তাঁর সহকারী কেভিন ইউ জানান, ৯/১১–র ওই হামলা থেকে জেসন শুধু বেঁচেও যাননি, ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আটক ব্যক্তিদের উদ্ধার করতে সহায়তাও করেন।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক