রহস্যময় আলোয় তোলপাড় ভারত-বাংলাদেশ
দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে আকাশে অদ্ভূত এক আলো দেখা গেছে বলে দাবি করা হয়েছে। সন্ধ্যার পর পরই সামাজিক যোগাযোগ ছড়িয়ে পড়ে সেই আলোর ছবি। ওই আলোকরশ্মির ছবি দিয়ে জানাতে থাকে—অদ্ভূত কিছু একটা দেখেছে তারা। পাশের দেশ ভারতেও একই অবস্থা। পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলা থেকে দেখা গেছে এই আলোকরশ্মি।
আলোকরশ্মির সূত্র কী? সে বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। তবে, ওই আলোর সম্ভাব্য কিছু সূত্রের তথ্য এসেছে কলকাতার বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে।
হিন্দুস্তান টাইমস মহিত কুমার নামে এক ব্যক্তির টুইট করা ভিডিও যোগ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে ভিডিওটি টুইট করার পাশাপশি তিনি নাসাকে ট্যাগ করে লিখেছেন, ‘ভারতের ঝাড়খণ্ডের এই অদ্ভুত আলোর বিষয়ে কি কিছু বলতে পারবে?’
ওই প্রতিবেদনে শুভময় চক্রবর্তীর টুইটও তুলে ধরা হয়েছে। ওই টুইটে তিনি লিখেছেন, ১৫ ডিসেম্বর দিগন্ত থেকে প্রায় ৪৫ ডিগ্রি দক্ষিণ আকাশে আলোর উৎসের মতো একটি চলমান মশাল সন্ধ্যার আকাশ হঠাৎ উজ্জ্বল করে তোলে। বিকেল পোনে ছয়টা থেকে ৫টা ৫৫ মিনিট পর্যন্ত টর্চের মতো এই আলো জ্বলে ছিল।’
ভারতের জ্যোতির্বিজ্ঞানী সন্দীপ চক্রবর্তীর বরাত দিয়ে কলকাতার অপর এক সংবাদমাধ্যম নিউজ ১৮ বাংলা জানায়, এটা কোনো স্যাটেলাইটের কিউব বা খণ্ডাংশ হতে পারে, যা ১০ থেকে ১২ গ্রাম ওজনের হবে। অত্যন্ত দ্রুত গতিতে এটি পৃথিবীর দিকে নেমে এসেছে। যত কাছে এসেছে ততই এর গতি বেড়েছে।’
এদিকে, গতকাল ভারত নিজেদের তৈরি দূরপাল্লার পারমাণবিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র অগ্নি-৫-এর সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছে। দেশটির বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে কিছু গণমাধ্যম বলছে, ‘রহস্যময় ওই আলোর সঙ্গে এই মিসাইল পরীক্ষার যোগ থাকতে পারে।’
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাফল্যের সঙ্গে নাইট ট্রায়াল (রাতের অন্ধকারে পরীক্ষা) শেষ করেছে অগ্নি-৫ ক্ষেপণাস্ত্র, যার পাল্লা পাঁচ হাজার কিলোমিটারের বেশি। অন্ধকারেও শত্রুকে সঠিকভাবে নিশানা করে ক্ষেপণাস্ত্রটি এগিয়ে যেতে পারে কি না, সেটাই পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে এদিন।’
আকাশে প্রায় তিন মিনিটের মতো ওই আলো দেখার কথা জানান অনেকে, অনেকে দাবি করেন পাঁ৫ মিনিটের। কেউ কেউ এটিকে উল্কাপাতের আলো বলেও মনে করেন। কারণ, গতকাল রাতে প্রতিঘণ্টায় ১২০টি উল্কা আতশবাজির মতো খসে পড়বে বলে আগেই খবর এসেছিল আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে। তবে, ভারতের মহাকাশ বিশেষজ্ঞ দেবীপ্রসাদ দুয়ারী বলছেন, ‘এটি উল্কাপাতের আলো হওয়া সম্ভব নয়।’