‘শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের’ প্রস্তুতি নিচ্ছে আফগান সরকার

গত তিন মাসে একের পর এক শহর দখল করে তালেবান যোদ্ধারা আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে প্রবেশের পর রক্তপাত এড়াতে ‘শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের’ ঘোষণা এসেছে সরকারের তরফ থেকে। খবর বিবিসি ও আল জাজিরার।
বিবিসি বলছে, দেশটির ভারপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল সাত্তার মিরজাকওয়াল আজ রোববার স্থানীয় টোলো টিভিতে প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, একটি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ‘শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের’ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তালেবান কাবুলে হামলা করবে না।
এর প্রস্তুতি নিতে তালেবান মধ্যস্থতাকারীরা এরই মধ্যে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের দিকে রওনা হয়েছে বলেও খবর দিয়েছে বিবিসি।
তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ এর আগে এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, কাবুল যেন শান্তিপূর্ণভাবে আত্মসমর্পণ করে, সেজন্য আফগান সরকারের সঙ্গে তাদের আলোচনা চলছে।
তালেবান যোদ্ধারা কাবুলের দুয়ারে পৌঁছে যাওয়ার সময়ই যুক্তরাষ্ট্র তাদের কূটনীতিকদের হেলিকপ্টারে করে সরিয়ে নেওয়া শুরু করে; কাবুল বিমানবন্দর ও দূতাবাস সুরক্ষিত করতে নতুন করে সেনাও পাঠানো হয়।

এক মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে সে সময় বলেন, ‘একটি ব্যাচ আফগানিস্তান ছেড়েছে, কর্মীদের বেশিরভাগই দেশটি ছাড়ার জন্য প্রস্তুত।’
এর পরপরই আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, তালেবান যোদ্ধারা চারপাশ থেকে কাবুলে ঢুকতে শুরু করেছেন।
রাজধানীতে প্রবেশের সময় তালেবান যোদ্ধাদের তেমন কোনো প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়নি বলে কাবুল থেকে জানিয়েছেন বিবিসির সাংবাদিক ইয়ালদা হাকিম, যিনি সেখানে কাজ করছেন এক দশকের বেশি সময় ধরে।
শুরুতে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ থেকে করা এক টুইটে কাবুলের বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, কাবুলের চারদিকে অনেকগুলো পয়েন্ট থেকে গুলির শব্দ শোনা গেছে কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনী আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে শহরের ‘নিয়ন্ত্রণ’ ধরে রেখেছে।
কিন্তু তালেবানের আত্মসমর্পণের আহ্বানের পর আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি যুক্তরাষ্ট্রের দূত জালমাই খলিলজাদ এবং ন্যাটোর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেছেন বলে খবর আসে। আর তারপর ভারপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভিডিও বার্তায় আসে ‘ক্ষমতা হস্তান্তরের’ প্রস্তুতির খবর।