শোকাচ্ছন্ন ব্রিটিশরা মেনে নিয়েছেন রানির মৃত্যুকে
বাবার মৃত্যুর দিন সকালে ২৫ বছর বয়সী এলিজাবেথ যেদিন রানি হলেন তখন তিনি ছিলেন কেনিয়ায়। দূরত্ব আর যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে বাবার মৃত্যু সংবাদটি পেতে কয়েক ঘণ্টা লেগে ছিল তার। যখন খবরটি এলো তিনি তখন ছিলেন গাছের উপর একটি উঁচু মাচায় যেখান থেকে তিনি দেখছিলেন একটি হাতির পাল নিজেদের মধ্যে পানি ছোঁড়াছুঁড়ি করছিল।
তাঁর গত ৭০ বছরের রাজত্বে বিশ্ব যে কতটা বদলে গেছে, তা বুঝা গেল গত বৃহস্পতিবার, রানির হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়া ও পরে তার মৃত্যু সংবাদের মধ্য দিয়ে। রাজ পরিবারের টুইটার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তথ্যটি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে লেগেছে মাত্র কয়েক মিলিসেকেন্ড। খবর ওয়াশিংটন পোস্টের।
ব্রিটিশদের কাছে এটা ছিল একটি চরম ধাক্কা, স্তম্ভিত করে দেওয়া আর অমোঘ নিয়তিকে মেনে নেওয়ার বাস্তবতা। একমাত্র রানি হিসেবে ব্রিটেনের মানুষ যাকে চিনতো, তাদের জীবনে যিনি ছিলেন ধ্রুব সত্যের মতো, সর্বক্ষেত্রেই যার প্রতিচ্ছবি ছিল হাতের নাগালে, ডাকটিকিট থেকে মুদ্রায়, যিনি ছিলেন নাগরিকদের দুঃখ-ভয় আর উদযাপনের অনুপ্রেরণা, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যিনি তার দাদি-নানিসুলভ আচরণে মন জয় করতেন সবার, এমনকি তাদেরও যারা এই প্রতিষ্ঠানকে পছন্দ করত না।
এলিজাবেথের সন্তান চার্লস যিনি ছিলেন রাজা হওয়ার সবচেয়ে লম্বা অপেক্ষমান তালিকায়, এখন তিনি হলেন রাজা আর তাঁর স্ত্রী ক্যামিলাকে সবাই ডাকবেন রানি হিসেবে।
৭৩ বছর বয়সী রক্তিম গালের চার্লস হতে যাচ্ছেন ২১ শতকের সবচেয়ে হাই প্রোফাইল পরিবেশবাদী যিনি জলবায়ু পরিবর্তন আর জীবাশ্ম ধ্বংসের বিরুদ্ধে সোচ্চার।
এই মুহূর্তটির অপেক্ষাতেই ছিলেন ব্রিটিশরা। তারা জল্পনা-কল্পনা করছেন কী হয় সামনের ১০টা দিন-কেমন হবে রাজকীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠান আর কেমনই বা হবে নতুন রাজার সিংহাসনে আরোহণ।
সামনের দিনগুলোতে ব্রিটিশরা দেখবেন এলিজাবেথের কফিন রাখা হবে স্কটল্যান্ডে, তারপর তা নিওয়া হবে লন্ডনে, নেওয়া হবে বাকিংহাম প্রাসাদ থেকে ওয়েস্ট মিনিস্টার হলেও। ভিআইপি থেকে শুরু করে সব শ্রেণির মানুষ তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে পারবে। ১৮ সেপ্টেম্বর হবে রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া।