সুদানে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে সেনাবাহিনীর গুলি, নিহত সাত
দুই বছরের ব্যবধানে ফের সামরিক অভ্যুত্থানের কবলে উত্তরপূর্ব আফ্রিকার দেশ সুদান। এবার সামরিক অভ্যুত্থানের বিপক্ষে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমেছে। অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে সেনাবাহিনীর গুলিতে সাতজন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে অন্তত ১৪০ জন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদুককে গ্রেপ্তারের পর দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করেছে সেনাবাহিনী। একইসঙ্গে বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আটক করা হয়েছে চার মন্ত্রীসহ পাঁচ শীর্ষ কর্মকর্তাকে।
গতকাল সোমবার সকালে রাজধানী খার্তুমে বিক্ষোভে নামেন বহু সুদানি। তারা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন। একইসঙ্গে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে সামরিক বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান।
শুরুতে নমনীয় থাকলেও, পরে বিক্ষোভকারীদের ওপর কঠোর হয় নিরাপত্তা বাহিনী। টিয়ার সেল এবং রাবার বুলেটের পাশাপাশি, আন্দোলনকারীদের ওপর ছোড়া হয় ফাঁকা গুলি। এ সময় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় রাজধানী খাতুর্ম ও ওমদুরমান শহরের বিভিন্ন এলাকা।
একজন বিক্ষোভকারী বলেন, ‘অসম্ভব! আমরা আবারও সেনাবাহিনীর অধীনে যাব না। এটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। দেশের নারী-পুরুষ, সব বয়সী মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। আমরা মিথ্যা গণতন্ত্র চাই না।’
এর আগে সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদুকের বাসভবন দখল করে তাঁকে গৃহবন্দি করে সুদানি সামরিক বাহিনী। এ ছাড়া আটক করা হয় চার মন্ত্রীসহ পাঁচ শীর্ষ কর্মকর্তাকে। অস্থিরতা ঠেকাতে বন্ধ করে দেওয়া হয় রাজধানী খার্তুমসহ বিভিন্ন শহরের ইন্টারনেট এবং টেলিযোগাযোগ। দুপুরে জরুরি অবস্থা জারি করে দেশটির সেনাবাহিনী। একইসঙ্গে বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়।
এদিকে সুদানে অভ্যুত্থানের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ. যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ এবং সংস্থা।
২০১৯ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় দেশটির সামরিক বাহিনী। ক্ষমতা ভাগাভগি করে নেয় সামরিক এবং বেসামরিক গোষ্ঠীগুলো। গেল সেপ্টেম্বরে ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টা চালায় সাবেক প্রেসিডেন্ট ওমর সমর্থিত সেনা সদস্যরা। এরপর থেকেই দেশটিতে ফের শুরু হয় রাজনৈতিক অচলাবস্থা।