সুদানে স্বর্ণের খনি ধসে নিহত ৬, আটকা পড়েছেন অনেকে

সুদানের উত্তরাঞ্চলে একটি স্বর্ণের খনি ধসে ছয়জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আরও অন্তত ২০ জন শ্রমিক আটকা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দেশটির কর্তৃপক্ষ এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
দেশটির বারবার এলাকার নির্বাহী পরিচালক হাসান ইব্রাহিম কারার জানিয়েছেন, শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) নীল নদ রাজ্যের বারবার শহরের পশ্চিমে উম অড এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়াদের উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তবে কী কারণে খনিটি ধসে পড়েছে তা তিনি জানাননি।
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) মধ্যে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে উভয় পক্ষই দেশটির স্বর্ণশিল্পের মাধ্যমে যুদ্ধের খরচ জোগাচ্ছে।
সরকারি ও বেসরকারি সূত্রগুলো বলছে, সুদানের প্রায় সব স্বর্ণ সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাধ্যমে কেনাবেচা করা হয়। অভিযোগ আছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত আরএসএফ-কে অস্ত্র সরবরাহ করে, যদিও তারা এই অভিযোগ অস্বীকার করে।
এই সংঘাত সত্ত্বেও সেনা-সমর্থিত সরকার ২০২৪ সালে রেকর্ড ৬৪ টন স্বর্ণ উৎপাদনের ঘোষণা দিয়েছে। আয়তনের দিক থেকে আফ্রিকার তৃতীয় বৃহত্তম দেশ সুদান এখনো মহাদেশের শীর্ষ স্বর্ণ উৎপাদনকারীদের মধ্যে অন্যতম।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সুদানের বেশিরভাগ স্বর্ণ কারিগরি ও ক্ষুদ্র আকারের খনির মাধ্যমে উত্তোলন করা হয়, যেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই দুর্বল ও প্রায়শই বিপজ্জনক রাসায়নিক ব্যবহৃত হয়। এর ফলে শ্রমিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি মারাত্মক আকার ধারণ করে।
খনি বিশেষজ্ঞরা আরও জানান, বর্তমানে যুদ্ধরত উভয় গোষ্ঠীর উৎপাদিত স্বর্ণের বেশিরভাগই সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছানোর আগে চাদ, দক্ষিণ সুদান ও মিশরের মধ্য দিয়ে চোরাচালান করা হয়। সংযুক্ত আরব আমিরাত বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্বর্ণ রপ্তানিকারক দেশ।
সুদানের এই সংঘাত হাজার হাজার মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে ও প্রায় এক কোটি মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে, যা বিশ্বের বৃহত্তম বাস্তুচ্যুতি সংকট তৈরি করেছে।