সুদানে সংঘাত চলছেই, সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বিদেশি নাগরিকদের
সুদানে দুটি সামরিক শসস্ত্র গোষ্ঠীর রক্তক্ষয়ী সংঘাতের কারণে অস্ত্রবিরতি সত্ত্বেও রাজধানী খার্তুম থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে কয়েকশ’ বিদেশি নাগরিককে। নতুন করে তৈরি হওয়া এই সংঘাতের ফলে দেশত্যাগ করা এসব বিদেশি নাগরিক গতকাল শনিবার সৌদি আরবের বন্দর নগরী জেদ্দায় পৌঁছেছেন।
পোর্ট সুদান থেকে লোহিত সাগর হয়ে জেদ্দায় সৌদি নৌ ঘাঁটিতে এসেছেন প্রায় ১ হাজার ৯০০ জন বিভিন্ন দেশের নাগরিক। সৌদি আরবের রাষ্টীয় সংবাদ সংস্থা এ তথ্য দেয়। খবর আলজাজিরার।
এই দলে রয়েছেন ৬৫ জন ইরানি নাগরিক যারা পোর্ট সুদান থেকে জেদ্দা হয়ে ইরানে যাবেন। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই তথ্য দিয়েছে। সুদান ছেড়ে আসা দলটির সদস্য এক ইরানি নাগরিক বলেন, ‘যুদ্ধের কারণে খার্তুমে আমরা খুব খারাপ অবস্থায় ছিলাম, আমরা জানতাম না আমাদের কী করা উচিত ছিল। সৌদি আরবকে ধন্যবাদ ভালো একটি ভ্রমণের ব্যবস্থার জন্য আর আমি এখন খুব খুশি।’
এর আগে, সুদান থেকে ১৬টি দেশের নাগরিকদের বহন করে নিয়ে আসা আরব আমিরাতের একটি বিমান রাজধানী আবুধাবীতে পৌঁছে। বিমানটিতে ব্রিটিশ ও আমেরিকানসহ ১২৮ জন যাত্রী ছিল। এ সময় যাত্রীদের অভ্যর্থনা জানান কর্মকর্তারা।
এদিকে, আলাদাভাবে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের উদ্যোগে লোহিত সাগরের শহর পোর্ট সুদানে শনিবার একটি কনভয় মার্কিন নাগরিক, স্থানীয় কর্মকর্তা ও আরও কিছু লোককে সরিয়ে নেয়।
এছাড়া, সুদানে সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) শসস্ত্র সংঘাতের ফলে প্রায় ১০ হাজার মানুষ পার্শ্ববর্তী দেশ চাদ, মিশর, দক্ষিণ সুদান ও ইথিওপিয়াতে পালিয়ে গেছে।
এদিকে, সুদানে শসস্ত্র সংঘাত তৃতীয় সপ্তাহে পা দিয়েছে। গতকাল রাজধানী খার্তুমের সেনা সদরদপ্তর ও প্রেডিন্সিয়াল প্যালেসের কাছে প্রচণ্ড লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেছে। অধিবাসীরা জানায় গুলি ও গোলার শব্দ শোনা গেছে সারাদিন। এখন শহরটির উত্তর প্রান্তের বাহরি এলাকায় প্রচণ্ড লড়াই চলছে।
সমস্যা সঙ্কুল সুদানে নতুন করে গত ১৫ এপ্রিল থেকে ক্ষমতার লড়াইয়ের কারণে সৃষ্টি হওয়া সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে সেনাবাহিনী ও আরএসএফ। সহিংসতায় এ পর্যন্ত ৫২৮ জন নিহত হয়েছে আর আহত হয়েছে ৪ হাজার ৫৯৯ জন। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য দিয়েছে তবে তা সম্পূর্ণ নয় বলে জানানো হয়েছে। জাতিসংঘের ধারণা অনুযায়ী প্রায় ৭৫ হাজার মানুষ এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।