২ বছরের মধ্যে প্রথম প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করল ইরান
ইরান গত দুই বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে। দেশটির একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) এটিকে মধ্যযুগীয় চর্চা বলে অভিহিত করেছে। একই সঙ্গে ইরানে ক্রমবর্ধমান দমন-পীড়ন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। খবর এনডিটিভির।
গতকাল শনিবার (২৩ জুলাই) স্থানীয় সময় ভোরে একজন পুলিশ অফিসারকে হত্যার দায়ে ইমান সাবজাইকার নামের এক ইরানিকে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়া হয়।
নরওয়েভিত্তিক এনজিও ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) বলছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর শিরাজে একজন পুলিশ অফিসারকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন ইমান সাবজাইকার।
সংস্থাটির মতে, ইরানের রাষ্ট্রীয় মিডিয়া প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। দেশটির সুপ্রিম কোর্ট চলতি মাসের শুরুতে ইমান সাবজাইকারকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির রায় দেন।
আইএইচআরের পরিচালক মাহমুদ আমিরি-মোগাদ্দাম বলেন, জনসাধারণের মধ্যে এই নৃশংস শাস্তির পুনঃপ্রবর্তনের উদ্দেশ্য হলো- মানুষ যেন ভয় পায় এবং প্রতিবাদ করা থেকে বিরত থাকে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মৃত্যুদণ্ডের বিশেষ করে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে কঠোর অবস্থান নেওয়ার মাধ্যমে এই ধরনের মধ্যযুগীয় চার্চার বিপক্ষে অবস্থান নিতে পারে, যোগ করেন তিনি।
প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত ছবিতে দেখা যায়, ইরানের হালকা নীল ও কালো ডোরাকাটা কারাগারের পোশাক পরা এক ব্যক্তি একটি ট্রাকের ওপর ক্রেনের সঙ্গে সংযুক্ত রশিতে মাটি থেকে কয়েক মিটার ওপরে ঝুলছেন।
ইরানে সাধারণত কারাগারের অভ্যন্তরে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তবে সেখানের কর্মীদের মতে, যদি কেউ নিরাপত্তা বাহিনীর কোনো সদস্যকে হত্যা করে, তবে তার ফাঁসি জনসম্মুখে কার্যকর করা হয়। যাতে করে পরবর্তীতে কেউ আর এ ধরনের অপরাধ করার সাহস না পায়।
আইএইচআরের মতে, সর্বশেষ ২০২০ সালের ১১ জুন দেশটিতে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া আরও চারজন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি এই মুহূর্তে ইরানের কারাগারে বন্দি আছেন, যাদের সবাই পৃথকভাবে পুলিশ অফিসারদের হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত। ধারণা করা হচ্ছে, তাদেরও প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।