মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন
ফের হস্তক্ষেপের তালিকায় রাশিয়া-ইরানের নাম, যোগ হয়েছে চীনও
ঘনিয়ে আসছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মূল ভোট পর্ব। বিশ্বের নজর এখন সেদিকে। বাংলাদেশ ও তার জনগণের কাছেও এ নিয়ে আগ্রহের কমতি নেই। বিভিন্ন কারণেই বরাবরের মতোই ক্ষমতাধর দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে অন্যান্য দেশগুলোর কাছে। তাই নানা সময়ে হস্তক্ষেপের অভিযোগও ওঠে অন্য দেশের বিরুদ্ধে। গতবার ট্রাম্প-বাইডেন ভোটের লড়াইয়ে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ ছিল বেশ আলোচনায়। আর এবার তার সঙ্গে নতুন করে যোগ হলো চীনের নাম। আর বরাবরের মতো এবারও হস্তক্ষেপের অভিযোগের তালিকায় আছে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে আলোচিত ইরানও। খবর ভয়েস অব আমেরিকা, ইউরো নিউজ ও সিবিএসের।
ফ্রান্সের গণমাধ্যম ইউরো নিউজের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মার্কিন নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে রাশিয়া, ইরান ও চীন প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টা বাড়াতে পারে। টেক জায়ান্ট মাইক্রোসফট তাদের নতুন প্রতিবেদনে বলেছে, বেনামিতে রাশিয়ার পক্ষ থেকে মিনেসোটা গভর্নর ওয়ালজ ডেমোক্র্যাট পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের যে প্রচারাভিযান, তাকে দুর্বল করতে পদক্ষেপ নিতে চলেছে। মাইক্রোসফ্টের নতুন প্রতিবেদন অনুসারে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে রাশিয়া, ইরান ও চীন ভোটকে প্রভাবিত করার জন্য অব্যাহত দৃঢ়তা দেখিয়েছে।
ইউরো নিউজ আরও বলছে, রুশ অ্যাক্টিভিস্টরা কমলা হ্যারিসের প্রচারাভিযানকে ধোঁকা দিতে ভূয়া ভিডিও ক্লিপ আগের তুলনা দ্বিগুণ হারে প্রকাশ করছে। অন্যদিকে গত বুধবার গোয়েন্দার তথ্য বলছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চীনের সমালোচনাকারীরা রিপাবলিকানদের অপমান করছে। চীনের সমালোচনা করা অন্তত চার রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে বেইজিং। এদের মধ্যে রয়েছেন টেক্সাসের রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা মাইকেল ম্যাককওল, আলাবামার রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা ব্যারি মুর ও ফ্লোরিডার রিপাবলিকান নেতা মার্কো রুবিয়ো। যদিও রাশিয়া, চীন এবং ইরান সবাই মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করতে চাচ্ছে এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
এক বিবৃতিতে চীনা দূতাবাস বলেছে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সেই নির্বাচনে হস্তক্ষেপে চীনের কোনো ইচ্ছা নেই এবং বেইজিং তা কখনোই করবে না।
মার্কিন গণমাধ্যম সিবিএসও জানিয়েছে, ইরান মার্কিন নির্বাচনকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে। তারা জাল সংবাদ সাইট এবং সাইবার আক্রমণের মাধ্যমে তাদের উদ্দেশ সাধনের চেষ্টা চালাচ্ছে। ইউরো নিউজের প্রতিবেদন বলছে, জাতিসংঘে ইরানের মিশন থেকে একটি বিবৃতিতে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলা হয়েছে, ‘ইতিমধ্যেই দ্ব্যর্থহীনভাবে এবং বারবার ঘোষণা করা হয়েছে, ইরানের মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার কোনো উদ্দেশ বা অভিপ্রায় নেই। গত বুধবার রাশিয়ার দূতাবাসও একই বার্তা দিয়েছে।
ভয়েস অব আমেরিকা মাসখানেক আগে তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগে অভিযুক্ত ইরানি অভিনেতাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনঃনির্বাচন প্রচারাভিযানকে দুর্বল করতে এবং আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে উপেক্ষা করার প্রচেষ্টার জন্য একাধিক অপরাধের অভিযোগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তিন ইরানি হ্যাকারের ওপর নজর দিয়েছে। মার্কিন ভোটাররা ভোটে না যাওয়া পর্যন্ত এবং মার্কিন কর্মকর্তারা ওয়াশিংটন এবং এর বাইরেও ইরানের বিভক্তি ও বিভেদ সৃষ্টির জন্য আরও গভীর ষড়যন্ত্র চলছে বলে জানা গেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক সরকারি সংস্থা এসব তথ্য জানিয়েছে। এফবিআই ডিরেক্টর ক্রিস্টোফার রে একটি ভিডিও বিবৃতিতে এ নিয়ে সতর্ক করেছেন। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘যদি আমাদের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেন, তবে আমরা আপনাকে জবাবদিহিতার আওতায় আনব।’