চীনে একজন বৃদ্ধাকে শূকরের খোঁয়াড়ে বন্দি করে রাখার ছবি প্রকাশ পাওয়ার পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি ভগ্নস্বাস্থ্যের ওই বৃদ্ধাকে শূকরের খোঁয়াড়ে রাখার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় তুলে।

নব্বই বছরের বেশি বয়সী বৃদ্ধার এই করুণ ছবি সামাজিকমাধ্যমে ক্ষুব্ধ করে তুলেছে অনেককে।

চীনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো দক্ষিণাঞ্চলীয় গুয়াংজি প্রদেশে ৯২ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধাকে তাঁর ছেলে ও ছেলেবউ এভাবে বন্দি করে রাখে বলে জানায়।

ভিডিও প্রকাশকারী লিখেন, বেশ কয়েক বছর ধরে ওই বৃদ্ধ মা শূকরের খোঁয়াড়েই থাকতেন।

সাউদার্ন মর্নিং পোস্ট পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, ইয়াং নামে ওই বৃদ্ধাকে ১০ বর্গমিটার সেলের ভেতর কাঠের বেঞ্চিতে ঘুমাতে দেওয়া হয়েছে।

তবে তিনি নিজের ইচ্ছাতেই সেখানে ছিলেন কি না, তাও খতিয়ে দেখছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।

এমন সময়ে চীনে এই মর্মান্তিক ভিডিও নিয়ে সোরগোল উঠল যখন দেশটির তরুণ প্রজন্মের একটি অংশের মধ্যে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের প্রতি অবহেলার বিষয়টি নিয়ে অনলাইন মাধ্যমগুলোতে বেশ সমালোচনা হচ্ছে।

সাউদার্ন মর্নিং পোস্ট জানায়, ইয়াং নামে ওই বৃদ্ধার ঘটনাটিও হয়তো অজানাই থেকে যেত যদি না প্রিটি নান গুলান নামে স্থানীয় একজন নারী একটি ভিডিও পোস্ট করতেন। মিয়াওপাই নামের জনপ্রিয় ভিডিও সার্ভিসে খাঁচার ভেতর বসে থাকা নব্বই বছরোর্ধ্ব বৃদ্ধার ভিডিও প্রকাশ করেন প্রিটি নান গুলান।

গত ৬ জানুয়ারি আপলোডের পর থেকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত দুই কোটির বেশিবার ভিডিওটি দেখা হয়েছে।

১০ হাজারের বেশি অনলাইন ব্যবহারকারী হ্যাশট্যাগ দিয়ে পোস্টটি শেয়ার করেছে যেখানে বৃদ্ধার ছেলে ও ছেলেবউকে ‘পশু’ বলে অভিহিত করা হয়।

এরপর বৃদ্ধার স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময় তার হাড্ডিসার শরীরের ছবি মর্নিং পোস্ট পত্রিকায় ছাপা হলে তা আরো বিক্ষুব্ধ করে তোলে অনেককে।

তবে চীনের সমাজে এই ধরনের ঘটনা একেবারে নতুন নয়। সেখানে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের প্রতি প্রায়ই সন্তানদের এমন অবহেলার ঘটনার খবর পাওয়া যায়। ২০১৪ সালে হেনান প্রদেশে নব্বই বছর বয়সী এক বৃদ্ধ অবহেলার শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন।

এ ছাড়া গত বছরের নভেম্বর মাসেই ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধকে রাস্তায় আবর্জনার ভেতর থেকে খাবার উঠিয়ে খাওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় তুলে। খবরে বলা হয়,ওই বৃদ্ধ বাবা তাঁর একমাত্র মেয়ের কাছে বোঝা হয়ে উঠেছিলেন।