লন্ডন হামলায় আইএসের দায় স্বীকার, আটক ১২
যুক্তরাজ্যের লন্ডন ব্রিজ ও পাশের বরো মার্কেটে হামলার দায় স্বীকার করেছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। হামলার প্রায় ২০ ঘণ্টা পর নিজেদের সংবাদ সংস্থা ‘আমাকে’ এর দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় জঙ্গিরা।
আমাকে দেওয়া ওই বিবৃতিতে জানানো হয়, আইএস সমর্থিত ‘বিচ্ছিন্ন’ তিন সৈনিক সফলতার সঙ্গে হামলা চালিয়েছে। এটা ধারাবাহিক বার্তার একটি।
স্থানীয় সময় শনিবার মধ্যরাতে লন্ডন ব্রিজ ও সেতুসংলগ্ন বরো মার্কেটে হামলা চালানো হয়। হামলায় কমপক্ষে ১০ জন নিহত ও ৪৮ জন আহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। নিহতদের মধ্যে তিন হামলাকারীও রয়েছেন।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক ডাকেন প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে। যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, ফ্রান্স, জার্মানিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা এ হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।
এদিকে, হামলার পর গত ২৪ ঘণ্টায় এ হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে লন্ডন পুলিশ। পূর্ব লন্ডনের বাকিং ও আশপাশের আবাসিক এলাকা থেকে সন্দেহভাজনদের আটক করা হয়। পুলিশের এক মুখপাত্রের দাবির বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, হামলাকারীদের প্রকৃত পরিচয় জেনেছে পুলিশ। তবে আরো তদন্তের স্বার্থে এখনই কিছু জানানো হবে না।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, মধ্যরাতে সাদা একটি গাড়ি রাস্তা ছেড়ে লন্ডন ব্রিজের ফুটপাতে উঠে পড়ে এবং পথচারীদের চাপা দেয়। হামলার সময় সেতুটিতে ছিলেন বিবিসির সাংবাদিক হলি জোন্স। তিনি জানান, একজন পুরুষ ঘণ্টায় প্রায় ৫০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চালিয়ে ব্রিজের ফুটপাতে পথচারীদের ওপর উঠে পড়ে।
এরপর তিন হামলাকারী একটি ভ্যানগাড়ি থেকে নেমে লন্ডন ব্রিজসংলগ্ন বরো মার্কেট এলাকায় অবস্থান করা লোকজনের ওপরে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করা শুরু করে। এ সময় তাঁরা চিৎকার করে বলছিল, ‘এটা আল্লাহর জন্য।’
পরে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় তিন হামলাকারী। গুলি করে হত্যা করার আগপর্যন্ত মোটামুটি আট মিনিট ধরে চলে হামলা। বরো মার্কেট এলাকায় বেশ কয়েকটি রেস্তোরাঁ ও বার রয়েছে। রোববার সাপ্তাহিক ছুটির আগের রাত হওয়ায় অনেকেই ওই স্থানে অবস্থান করছিলেন।
হামলাকারীদের একজনের শরীরে সুইসাইড ভেস্ট পরা ছিল বলে জানান কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
হামলার পরপরই একে সন্ত্রাসী হামলা বলে নিশ্চিত করেছে লন্ডন পুলিশ। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে এই হামলাকে ‘ভীতিকর ঘটনা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
লন্ডনের মেয়র সাদিক খান ছুটির দিনের আগের রাতে এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এটি পরিকল্পিত ও কাপুরুষোচিত হামলা।