ক্রেডিট কার্ডে ব্যক্তিগত জিনিস কিনে পদত্যাগ করলেন প্রেসিডেন্ট
পদত্যাগ করেছেন মরিশাস প্রেসিডেন্ট আমিনাহ গারিব ফাকিম। সম্প্রতি বেসরকারি একটি এনজিওর দেওয়া ক্রেডিট কার্ড ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে পদত্যাগে বাধ্য হন তিনি।
দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। গতকাল শনিবার গারিব ফাকিমের আইনজীবী সাংবাদিকদের জানান, আগামী ২৩ মার্চ আমিনাহ গারিব ফাকিম কার্যালয় ত্যাগ করবেন।
২০১৬ সালে লন্ডনভিত্তিক এনজিও প্লানেট আর্থ ইনস্টিটিউট (পিইআই) গারিব ফাকিমকে একটি ক্রেডিট কার্ড দেয়। কার্ডটি তাঁকে দেওয়া হয় শুধু প্রতিষ্ঠানটির কাজে ভ্রমণ ও অন্যান্য কাজ করার জন্য। কিন্তু এই কার্ড তিনি ব্যবহার করলেন নিজের ব্যক্তিগত পোশাক ও গহনা কেনার জন্য।
প্লানেট আর্থ ইনস্টিটিউশনের প্রতিষ্ঠাতা আলভারো স্রোভিংহো একজন ব্যাংকার যিনি মরিশাসে ব্যবসা করার জন্য বেশ কিছুদিন ধরেই চেষ্টা করছেন।
তাই শুধু কেনাকাটার বিষয়টি নয়, সংস্থাটির সঙ্গে প্রেসিডেন্টের এই সম্পর্ক মরিশাসে কীভাবে প্রভাব ফেলবে সেটিই অভিযোগের মূল বিষয় হয়ে ওঠে।
তবে এসব বিষয়ে ক্রেডিট কার্ডটির ব্যবহার পুরোপুরি একটি দুর্ঘটনা ছিল বলে দাবি করেছেন গারিব ফাকিম। তিনি বলেন, পিইআইয়ের কার্ডটি তিনি ব্যবহার করেছেন, কেননা একই ব্যাংকে তাঁর নিজেরও একটি ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। দুই কার্ডের মধ্যে গুলিয়ে ফেলেছিলেন বলে দাবি করেন এই প্রেসিডেন্ট।
তবে এই টাকাসহ প্রতিষ্ঠানে তাঁর দায়িত্বের সঙ্গে সম্পৃক্ত যৌক্তিক সব টাকা পিইআইকে ফিরিয়ে দিয়েছেন বলে জানান আমিনাহ গারিব ফাকিম।
এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমিনাহ গারিব ফাকিম পিইআই থেকেও পদত্যাগ করেছেন। পিইআই এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এদিকে প্রতারণার অভিযোগে সুইজারল্যান্ড এবং পর্তুগালে আলভারো সোভ্রিংহোর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
২০১৭ সালে মরিশাসে একটি বিনিয়োগ ব্যাংক তৈরির অনুমতি পান সোভ্রিংহো। সেই থেকেই সরকারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের নানা সমালোচনা হচ্ছিল।
গত সপ্তাহে দেশটির প্রেসিডেন্ট প্রভিন্দ যুগনৌথ গারিব ফাকিমের পদত্যাগের কথা জানালেও পদত্যাগ করবেন না বলেই তিনি জানিয়েছিলেন। এমনকি এই ধরনের মানহানিকর অভিযোগের বিরুদ্ধে তিনি আদালতে যাবেন বলেও জানান আমিনাহ গারিব ফাকিম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ তাঁকে করতেই হচ্ছে।
২০১৫ সালের মে মাস থেকেই প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছিলেন গারিব ফাকিম। এর আগে তিনি খ্যাতিমান জীববিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করতেন। বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় অবদানের জন্য তিনি বেশ কয়েকবার পুরস্কৃত হয়েছেন।