ইয়েমেনে শরণার্থী শিবিরে হামলা, নিহত ৪০
ইয়েমেনে একটি শরণার্থী শিবিরে গতকাল সোমবার এক হামলায় ৪০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো অনেক। স্থানীয় এলাকাবাসী ও অনেক সংগঠনের দাবি সৌদি নেতৃত্বাধীন আরব জোট শরণার্থী শিবিরের ওপর বিমান হামলা চালিয়েছে। আর সৌদি আরবের হামলার সমর্থক ইয়েমেন কর্তৃপক্ষের দাবি হুতি বিদ্রোহীদের কামানের গোলায় এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
সৌদি সীমান্তের কাছে হাজ্জাহ প্রদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে আল-মাজরাক শিবিরে হামলার ঘটনা ঘটে। হুতি নিয়ন্ত্রিত আলমাসিরাহ টেলিভিশনে হামলায় নিহতদের মরদেহ দেখানো হয়।
চিকিৎসকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ডক্টরস উইথদাউট বর্ডারসের (এমএসএফ) মধ্যপ্রাচ্যের প্রোগ্রাম ব্যবস্থাপক পাবলো মারকো বলেন, শরণার্থী শিবিরের ওপর বিমান হামলা চালানো হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকেই শরণার্থীরা আল-মাজরাক শিবিরে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে বসবাস করছে।
জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) মুখপাত্র বাবার ব্যালুচ আল-জাজিরাকে বলেন, এই হতাহতের কারণ অস্পষ্ট। কীভাবে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে সে ব্যাপারে আমরা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। কিন্তু বাস্তুচ্যুত এই মানুষগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, হামলায় নিহতদের বেশির ভাগই হুতি বিদ্রোহী। পাঁচ বছর আগে সমাপ্ত হওয়া লড়াইয়ে গৃহহীনরাই ওই শিবিরে থাকত। সম্প্রতি শরণার্থী শিবির বিদ্রোহীরা দখল করে নিয়েছে।
আরব জোটের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ আল-আসিরি বলেন, হুতি বিদ্রোহীদের ছোঁড়া গুলির পাল্টা হিসেবে যুদ্ধবিমান থেকে হামলা চালানো হতে পারে। কিন্তু লক্ষ্যবস্তু শরণার্থী শিবির ছিল কি না ব্যাপারটি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। জোটের পক্ষ থেকে ইয়েমেনি কর্মকর্তাদের এটি নিশ্চিত হতে বলা হয়েছে। আসিরি গতকাল বলেন, ইয়েমেনে বিদ্রোহীদের প্রবেশ বা পরিত্যাগ ঠেকাতে নৌবাহিনী নৌ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।
ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন আরব জোট গত বুধবার বিমান হামলা শুরু করেছে। সেদিন বন্দর নগরী এডেন ত্যাগ করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদ রাব্বু মনসুর আল হাদি। গত মাসে বিদ্রোহীরা রাজধানী সানা দখল করে নেওয়ার পর প্রেসিডেন্ট হাদি এডেনে আশ্রয় নিয়েছিলেন। বিদ্রোহীরা এডেনেও ঘাঁটি করার পর হাদি সৌদি আরবে পালিয়ে যান। সেখান থেকেই তিনি মিসরে অনুষ্ঠিত আরব সম্মেলনে যোগ দেন।
দীর্ঘদিন ধরেই ইয়েমেনে আল-কায়েদার শাখা রয়েছে। আল-কয়েদা সদস্যদের রুখতে ইয়েমেন সরকার দেশের ভূখণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রেকে ড্রোন হামলা ও বিশেষ অভিযানের অনুমতি দিয়েছিল। মার্কিন বিশেষ বাহিনী প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যায়। প্রতিবেশী দেশে এ ধরনের বিশৃঙ্খলাকে মারাত্মক হুমকি হিসেবে দেখছে সৌদি আরব। ইয়েমেনের সঙ্গে তাদের দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে।

অনলাইন ডেস্ক