নিহতের সংখ্যা পাঁচ হাজার ছাড়াল
নেপালে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। মঙ্গলবার রাতে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ৮১ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এ ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত মোট আট হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। তাঁদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
এদিন নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালা আশঙ্কা করেন, ভয়াবহ ভূমিকম্পে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। তিনি মঙ্গলবার দেশটিতে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেন।
সুশীল কৈরালা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, উদ্ধার ও সহায়তা প্রদানে সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। তবে এ মুহূর্তের পরিস্থিতি নেপালের জন্য খুবই কঠিন।
জানা গেছে, ভূমিকম্প-পরবর্তী উদ্ধার অভিযানে সরকারের ধীরগতি এবং খাদ্য, পানি ও অন্যান্য সরবরাহসহ মানবিক সহায়তার স্বল্পতা নিয়ে শঙ্কা করেছেন অনেকে। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক প্রত্যন্ত গ্রামে এখনো উদ্ধারকারী দল পৌঁছাতে পারেনি। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোতে উদ্ধার অভিযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত মোট নিহতের সংখ্যা জানা যাবে না।
ভূমিকম্পের তিনদিন পরও লাখ লাখ নেপালিকে প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যে তাঁবুর নিচে অবস্থান করতে দেখা গেছে। তাঁদের কাছে নেই প্রয়োজনীয় খাদ্য ও চিকিৎসাসামগ্রী। ত্রাণসামগ্রীও তাঁদের কাছে ঠিকমতো পৌঁছাচ্ছে না।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, বিধ্বস্ত নগরী কাঠমান্ডুর হাসপাতালগুলোতে জায়গা হয়নি দুর্ঘটনায় আহত ও অসুস্থ অনেক মানুষের। বাধ্য হয়ে এসব মানুষ শুয়ে আছে খোলা আকাশের নিচে।বিপুল মানুষের চাপ সামলাতে না পেরে কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজের মাঠেই তাঁবু টানিয়ে করা হয়েছে অস্ত্রোপচারের কক্ষ। সেখানেই চলছে অসুস্থ ব্যক্তিদের অস্ত্রোপচার।
নেপালের গোর্খা অঞ্চলের শীর্ষ কর্মকর্তা উদাভ প্রসাদ তিমালসিনা মঙ্গলবার বলেন, মানুষ পর্যাপ্ত খাবার ও আশ্রয় পাচ্ছে না। এ অঞ্চলের ৭০ শতাংশ বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। ওই অঞ্চলটি ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের বেশ কাছের।
ঘটনার দিন থেকে হিমালয়ের অনেক উঁচুতে বিদেশি ও নেপালি পর্বতারোহী আটকা পড়েছেন। এরই মধ্যে তুষারধসে মারা গেছেন ১৮ পর্বতারোহী।
এ ভূমিকম্পে ভারতে ৬১ জন নিহত হয়েছে। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিনহুয়া জানিয়েছে, তিব্বতে ২৫ জন নিহত হয়েছে। আর এভারেস্ট পর্বতে মারা গেছে ১৮ জন।
চিকিৎসা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে বেঁচে যাওয়া মানুষরা ঝুঁকির মধ্যে আছেন। খোলা স্থানে তাঁবুতে থাকা মানুষের জন্য পয়োনিষ্কাশন ও নিরাপদ পানির সুবিধা নেই।