সৌদিতে নিহত ওমরাহযাত্রীদের ১৮ জন ভারতের একই পরিবারের
সৌদি আরবের মদিনার কাছে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৫ ভারতীয় ওমরাহযাত্রী নিহত হয়েছেন। ওমরাহ যাত্রীদের বহনকারী বাসের সঙ্গে ডিজেল ট্যাঙ্কারের সংঘর্ষের ফলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ওমরাহ যাত্রীদের মধ্যে ১৮ জন ভারতের হায়দরাবাদের একটি পরিবারের সদস্য। এদের মধ্যে ৯ শিশুও রয়েছে। দুর্ঘটনায় নিহত পরিবারটি আগামী শনিবার (২২ নভেম্বর) দেশে ফেরার পরিকল্পনা করেছিল বলে জানিয়েছেন তাদের আত্মীয়রা।
তাদের আত্মীয় মোহাম্মদ আসিফ জানিয়েছেন, আমার ভগ্নিপতি, ভগ্নিপতির স্ত্রী, তাদের এক ছেলে, তিন কন্যা ও তাদের সন্তানরা ওমরাহ করতে গিয়েছিলেন। তারা আট দিন আগে রওনা দিয়েছিলেন। ওমরাহ সম্পন্ন হয়ে তারা মদিনায় ফেরার পথে ছিলেন। রাত দেড়টার দিকে দুর্ঘটনা ঘটে এবং বাস আগুনে ঝলসে যায়। তাদের শনিবার দেশে ফেরার কথা ছিল।
আসিফ আরও জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার আগে তারা আত্মীয়দের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছিলেন। তিনি বলেন, এক পরিবারের ১৮ জন (৯ জন প্রাপ্তবয়স্ক ও ৯ জন শিশু) মারা গেছেন। এটা আমাদের জন্য একটি ভয়াবহ ট্র্যাজেডি।
নিহতদের মধ্যে আছেন- নাসিরুদ্দিন (৭০), তার স্ত্রী আখতার বেগম (৬২), ছেলে সালাউদ্দিন (৪২), কন্যারা — আমিনা (৪৪), রিজওয়ানা (৩৮), শাবানা (৪০) এবং তাদের সন্তানরা।
রামনগরস্থ নাসিরুদ্দিনের পরিবারের একজন প্রতিবেশী চাবি নিয়ে আসেন। বাড়িতে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে ভগ্নিপতির বোনের করুণ কান্না ছড়িয়ে পড়ে। তিনি চিৎকার করে বললেন, আমার ভাইয়ের পুরো পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে।
প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, বাসটিতে ৪৬ জন ওমরাহযাত্রী ছিলেন, যাদের সবাই ভারতীয়। মদিনা থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে একটি ডিজেল ট্যাঙ্কারের সঙ্গে বাসটির সংঘর্ষের ফলে আগুন ধরে যায়। ফলে ওমরাহযাত্রীদের ৪৫ জনই মারা যান। একজন প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন। বেশিরভাগ যাত্রী তখন ঘুমাচ্ছিলেন, তাই তারা সময়মতো বের হতে পারেননি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুর্ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, আমার সমবেদনা তাদের সঙ্গে আছে যারা তাদের প্রিয়জন হারিয়েছেন। আহতদের দ্রুত সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করছি। রিয়াদে আমাদের দূতাবাস এবং জেদ্দার কনস্যুলেট সমস্ত সহায়তা প্রদান করছে। আমাদের কর্মকর্তারা সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগে আছেন।
তেলেঙ্গানা মুখ্যমন্ত্রী রেভান্থ রেড্ডি এই দুর্ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং শীর্ষ স্থানীয় কর্মকর্তাদের কনস্যুলেটের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, সরকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে থাকবে। আমি প্রার্থনা করি তারা যেন ধৈর্য্য ধরতে পারে।
ভারতের কনস্যুলেট জেদ্দায় কন্ট্রোল রুম এবং হেল্পলাইন স্থাপন করেছে।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক